একটি ছবি ও ভাষা আন্দোলনের কিছু স্মৃতি
দৈনিক বান্দরবান
প্রকাশিত: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২১
একটি ছবি। ছবিটি ৬৯ বছর আগের তোলা। কয়েকজন নারী, একজনের হাতে একটি কালো পতাকা। পা খালি। মাঝখানের জনের বাদে বাকিদের সবার পোশাক সাদা। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি। মাতৃভাষার দাবিতে মিছিল। স্পট কোথায় জানি না। নিঃসন্দেহে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা আজকের যেখানে শহিদ মিনার, তার আশপাশে কোথাও হবে। মাতৃভাষার দাবিতে ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরাও যে অংশ নিয়েছিলেন, এ ছবি তার বড় প্রমাণ। একজন বাদে, ছবির কাউকেই আমি চিনি না। ওই সময় আমার জন্মও হয়নি। আর ছবির আশপাশে যারা, তাদের সন্তানদের সঙ্গেও আমার কোনো পরিচয় নেই। চিনিও না। মিছিলের সামনে সাদা শাড়িতে যিনি মিছিলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, শুধু তাকে আমি চিনি। তিনিও গত হয়েছেন অনেক বছর আগে, মাত্র ৪৯ বছর বয়সে।
যারা ভাষা আন্দোলন নিয়ে গবেষণা করেছেন, কিংবা আগামীতেও করবেন, তাদের কারো কাছে এ ছবিটি সংগ্রহে আছে কী না, কিংবা এই ছবির ‘গল্প’ তাদের জানা আছে কী না জানি না। কিন্তু এটা একটা ঐতিহাসিক ছবি। ছোটখাটো এই মানুষটি, যিনি মিছিলের অগ্রভাগে থেকে মিছিলের নেতৃত্ব দিয়ে গেছেন, তিনি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের ছাত্রী। ভাষা আন্দোলনে অংশ নেওয়ার কারণে পুলিশের হাতে তিনি গ্রেফতার বরণও করেছিলেন। এ তথ্য কোনো গবেষকরা সংরক্ষণ করেছেন কী না জানি না। কিন্তু ভাষা আন্দোলনের সময়কালে যে ক’জন ছাত্রী প্রগতিশীল ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তাদের মাঝে তিনিও ছিলেন। অনেকটা অবাক করার বিষয়, ওই সময় তিনি ছাত্রী হয়েও এসএম হলের সঙ্গে ‘এটাচ্ড’ ছিলেন। থাকতেন টিকাটুলি এলাকার কোথাও। সম্ভবত কোনো আত্মীয়ের বাসায় থেকে পড়াশোনা করতেন। যদিও ওই সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ছাত্রী নিবাস রোকেয়া হল চালু হয়নি। চামেলি হাউজ নামে ছোট্ট একটি ছাত্রী নিবাস চালু হয়েছিল ১৯৫৬ সালে (১৯৬৪ সালে রোকেয়া হল প্রতিষ্ঠিত হয়)। সম্ভবত এ কারণেই তিনি এসএম হলের সঙ্গে ‘এটাচ্ড’ ছিলেন। যখন রোকেয়া হল প্রতিষ্ঠিত হয়, ততদিন তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনার পাট চুকিয়েছেন।
ওই সময় মেয়েদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করা সহজ ছিল না। মফস্বলের একটি ছোট্ট মহকুমা (এখন জেলা) পিরোজপুর থেকে ঢাকায় এসে তৎকালীন বক্সিবাজারে অবস্থিত ইডেন মহিলা কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন। এ জন্যই টিকাটুলি এলাকায় থাকতেন, আর সেখান থেকে যেতেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তার খুব কাছের বন্ধুদের মাঝে ছিলেন অধ্যাপক সুফিয়া খাতুন (প্রথম মহিলা জাতীয় অধ্যাপক, প্রয়াত সৈয়দ ব্যারিস্টার ইসতিয়াক আহমদের স্ত্রী ও বিচারপতি রিফাত আহমদের মা), অধ্যাপক শরীফা খাতুন (একুশে পদকপ্রাপ্ত), অধ্যাপক হালিমা খাতুন, প্রয়াত অ্যাডভোকেট গাজীউল হক (ভাষা সৈনিক) প্রমুখ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সময় থেকেই তিনি প্রগতিশীল ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে তিনি কোনো পদ-পদবির জন্য লবিং করেননি। আইন পেশায় নিযুক্ত হয়েছিলেন। তিনি ছিলেন প্রথম মহিলা অ্যাডভোকেট। পরবর্তীতে তিনি নোটারি পাবলিকের দায়িত্বও পালন করেছেন। কাজ করেছেন ব্যারিস্টার ইসতিয়াক আহমদ, ও ব্যারিস্টার রফিকুল হকের জুনিয়র হিসাবে।
প্রগতিশীল রাজনীতি করলেও, তিনি রাষ্ট্রের কাছ থেকে কখনও কোনো রাজনৈতিক সুবিধা নেননি। ভাষা আন্দোলনে তার ভূমিকা নিয়েও সেভাবে আলোচনা হয়নি। তিনি নিজেও চাননি। বরাবরই পর্দার অন্তরালের মানুষ ছিলেন তিনি। ছোটখোট এ মানুষটি যে কত সাহসী ছিলেন, তার বড় প্রমাণ তিনি জেলগেটে বিয়ে করেছিলেন তৎকালীন প্রগতিশীল ছাত্র আন্দোলনের আরেক নেতা আনোয়ার জাহিদকে।
প্রগতিশীল রাজনীতি করার কারণে রাজনৈতিক অঙ্গনে সবার সঙ্গেই তার পরিচয় ছিল। তার পুরনো পল্টনের বাসায় আমি নিজে অনেকদিন প্রয়াত তাজউদ্দীন আহমদকে দেখেছি গাজীউল হককে দেখেছি। তাজউদ্দীনের মন্ত্রিত্ব চলে যাওয়ার পরও তিনি আসতেন। বঙ্গবন্ধুও তাকে চিনতেন। যতদূর মনে পড়ে শুনেছি বঙ্গবন্ধু তাকে তাজউদ্দীন আহমদের মাধ্যমে আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়া ও মহিলাদের সংরক্ষিত আসন থেকে তাকে সংসদ সদস্য হিসাবে মনোনয়ন দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি রাজনীতিতে জড়িত হতে চাননি। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পর প্রয়াত মসিউর রহমান (যাদু মিয়া) তাকে রাজনীতিতে নিয়ে আসতে চেয়েছিলেন। তখনও তিনি রাজি হননি। পল্টনের বাসায় ‘যাদু চাচা’ই (আমি তাকে এ নামেই ডাকতাম) লন্ডনে তার ছেলে স্বপন ভাইকে আমার জন্য একটি চিঠি দিয়েছিলেন, যাতে করে লন্ডনে আমার জন্য একটি থাকার ব্যবস্থা তিনি করে দেন। চীনের বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়ার পরপরই যে বেসরকারি একটি প্রতিনিধি দল চীনে গিয়েছিলেন, তিনি ছিলেন তার অন্যতম সদস্য। চীনের ‘বন্ধু’ ছিলেন তিনি। যে কারণে তার মৃত্যুর পর চীনা রাষ্ট্রদূত তার কবরে শ্রদ্ধাঞ্জলি দিতে সুদূর ডুমরিতলা (পিরোজপুর) ছুটে গিয়েছিলেন।
লোভ, পদ-পদবি তাকে কখনো আকৃষ্ট করেনি। তিনি চাইলে অনেক কিছু করতে পারতেন। মন্ত্রী, এমপি, অনেক কিছু তিনি হতে পারতেন। অনেকটা নিভৃতে থেকেছেন। আজ যখন দেখি রাজনীতিবিদদের ঢাকা শহরে বাড়ি, ফ্লাট, গাড়ি, তখন ভাবতে অবাক লাগে রাজনীতির শীর্ষ ব্যক্তিদের সঙ্গে সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও, তিনি এর কোনো প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেননি।
এই ভাষার মাসে এ মানুষটির ভাষা আন্দোলনে তার অবদানের কথা স্মরণ করছি। ছবিটি ঐতিহাসিক, এর অনেক মূল্য। যারা ভাষা আন্দোলন নিয়ে গবেষণা করেন, তারা তার সম্পর্কে আরও জানুন, জনগণকে জানান, এটা আমার প্রত্যাশা। রাষ্ট্র তার অবদানকে স্বীকৃতি দিক, এটাও আমার কামনা। তিনি অ্যাডভোকেট কামরুন নাহার লাইলী।
- নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে আহত ৩ জন
- উপজেলা নির্বাচন উৎসবমুখর দেখতে চাই - প্রধানমন্ত্রী
- দক্ষিণে বাড়ল কমিউটার ট্রেন যাত্রী পরিবহন শুরু আজ
- জুনে বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাচ্ছে দ্বিতীয় ইউনিট
- বন্দিদের সুস্থ রাখতে নানা উদ্যোগ কারাগারে
- সরকারিকরণ হলো জাহানারা ইমাম স্মৃতি জাদুঘর
- আইএমএফ ঋণের তৃতীয় কিস্তি ৭০ কোটি ডলার মিলবে জুনে
- চট্টগ্রামের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এখন দৃশ্যমান
- নিউরোসায়েন্সেস ইনস্টিটিউটে যুক্ত হচ্ছে আরও ৫০০ শয্যা
- চলতি অর্থবছরের ১০ মাসে প্লাস্টিক পণ্য রপ্তানি বেড়েছে ১৮ শতাংশ
- রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে প্রণোদনার সুপারিশ বাংলাদেশ ব্যাংকের
- অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে সেনাবাহিনী
- ভুল তথ্যে প্লট কেনা ও হস্তান্তরে বরাদ্দ বাতিল
- উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেয়ায় বান্দরবানে বিএনপির ৫ নেতা বহিষ্কার
- বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট আলীকদমে
- বান্দরবানে রাজার মাঠে মঞ্চ তৈরি বন্ধে জেলা প্রশাসককে রাজার চিঠি
- এনআইওতে চোখের চিকিৎসা নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী
- খাদ্য নিরাপত্তায় ২০ লাখ টন গম কিনছে সরকার
- মেয়র আতিক বললেন বস্তিবাসীর জন্য ৯ কুলিং জোন করবে ডিএনসিসি
- বাংলাদেশ ও গাম্বিয়া রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলার দ্রুত নিষ্পত্তিতে আশাবাদী
- বে টার্মিনাল প্রকল্পে গতি
- ‘মা ও শিশুর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’
- সন্ত্রাসবাদে ঢাকার সাফল্যের প্রশংসা মার্কিন দপ্তরের
- খুলনায় লবণাক্ত জমিতে বছরজুড়েই ফলছে ফসল
- আরও পাঁচ হাসপাতালে পরমাণু চিকিৎসাসেবা
- র্যাপিড পাসে পরিশোধ হবে সব গণপরিবহনের ভাড়া
- অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন অক্লান্ত পরিশ্রম করছে- জেলা প্রশাসক
- বান্দরবানে কালবৈশাখী ঝড়ে বিধ্বস্ত ৯০০ বসতঘর
- কালবৈশাখী ঝড়ে লামায় সহস্রাধিক বাড়িঘর বিধ্বস্ত
- আমাকে সরিয়ে তারা কাকে আনবে?
- উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেয়ায় বান্দরবানে বিএনপির ৫ নেতা বহিষ্কার
- অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন অক্লান্ত পরিশ্রম করছে- জেলা প্রশাসক
- বদলি হলেও চাকরিতে যোগদান করেননি নাথান বমের স্ত্রী
- কেএনএফের ২ জনকে রিমান্ড শেষে জেল হাজতে প্রেরণ
- মিয়ানমারের সেনাসহ ২৮৮ জনকে ফেরত পাঠাল বিজিবি
- প্রধানমন্ত্রী আজ দেশে ফিরছেন
- বৃষ্টির জন্য আগামীকাল বান্দরবানে নামাজ অনুষ্ঠিত হবে
- বান্দরবানে মে দিবস উদযাপন
- পরিবহন ধর্মঘটে বান্দরবানে দূরপাল্লার যানবাহন চলাচল বন্ধ, ভোগান্তিতে যাত্রীরা
- হুট করে হামলা শক্তির চেয়ে নিজেদের দুর্বলতার বহিঃপ্রকাশ
- বান্দরবানে সেনা অভিযানে কেএনএর সন্ত্রাসী নিহত
- বৃষ্টিতে স্বস্তি নগরজুড়ে
- বান্দরবানে প্রিজাইডিং, সহকারী প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসারদের প্রশিক্ষণ
- রুমায় সেনা অভিযানে দুই কেএনএ সন্ত্রাসী নিহত
- বান্দরবান পৌর এলাকায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড
- স্বামী সংসার স্বাভাবিক করতে সহযোগিতা চায় রুনা ত্রিপুরা
- আমাকে সরিয়ে তারা কাকে আনবে?
- বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হচ্ছেন চহ্লামং মারমা
- বান্দরবানে কেএনএফের আরও দুই সদস্য কারাগারে
- প্রচারণা বন্ধ করে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন থেকে সরে আশার ইঙ্গিত বর্তমান চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীরের