রোহিঙ্গা শরণার্থী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
দৈনিক বান্দরবান
প্রকাশিত: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১
গত ২৫ আগস্ট রোহিঙ্গা সংকটের চার বছর পূর্ণ হলো। ২০১৭ সালের এই দিন সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের রাখাইন স্টেট থেকে প্রাণভয়ে পালিয়ে আসা নিরাশ্রয় মানুষের নিরাপদ আবাসস্থলে পরিণত হয় বাংলাদেশ। আর মানবতাবাদী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা বিপদাপন্ন মানুষকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টায় সরকারের সামর্থ্য অনুযায়ী তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হন। ১২ সেপ্টেম্বর তিনি কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প পরিদর্শন করে বলেছিলেন, এ দেশের ১৬ কোটি মানুষকে খাওয়াতে পারলে কয়েক লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়া ও খাওয়ানো কোনো কঠিন কাজ নয়। আর সেই ক্যাম্পের আশ্রয় ব্যবস্থাপনা দেখতে এ দেশে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতরা সেখানে গিয়েছিলেন পরের দিন, ১৩ তারিখে।
সে সময় জননেত্রী শেখ হাসিনা মিয়ানমারকে ওই হত্যাযজ্ঞ বন্ধ ও তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে চাপ দেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন। তিনি আরও বলেছিলেন, ‘মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকেই সাময়িক সময়ের জন্য আশ্রয় দিচ্ছি আমরা। নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের জন্য এখানে সাময়িকভাবে থাকা, খাওয়া, চিকিৎসাসহ প্রয়োজনীয় সব কিছুর ব্যবস্থা করা হবে। আমরা আছি আর্তমানবতার সেবায়।’ ১৯ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি আবার জানান, বাংলাদেশ ধনী দেশ নয়। কিন্তু যদি আমরা ১৬ কোটি জনগণকে খাওয়াতে পারি, তবে আরও ৭ লাখ মানুষকেও খাওয়াতে পারব।’
অর্থাৎ প্রথম থেকেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা ইস্যুতে সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন, দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন। ফলে একদিকে মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির জন্য তিনি ‘মাদার অব হিউমিনিটিম’ উপাধিতে ভূষিত হয়েছেন অন্যদিকে তেমনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে শরণার্থীদের ন্যায্য দাবি নিয়ে সোচ্চার কণ্ঠে সংকট মোচনে নিজের অভিমত তুলে ধরেছেন। ২০১৭ সালে জাতিসংঘের ৭২তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিয়ে রোহিঙ্গাদের নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান এবং ৫ দফা দাবি পেশ করেন। ২০১৮ সালেও তিনি শান্তির অন্বেষণে শরণার্থী সমস্যার সমাধানে নির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন। ২০১৯ সালে তিনি বলেছেন, রোহিঙ্গাদের জন্য বাংলাদেশের বিভিন্ন সমস্যা হচ্ছে। তারা এখন বিশ্বের জন্যও হুমকি। রোহিঙ্গাদের যদি দ্রুত ফিরিয়ে নেওয়া না হয় এ সমস্যা আরও বাড়তে থাকবে।
বিভিন্ন দেশ এই সমস্যা জিইয়ে রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছে। এসব সত্ত্বেও মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের অধিকার ফিরিয়ে না দিয়ে তাদের ওপর মানসিক নির্যাতন করছে। বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গাদের জীবন বাঁচাতে বিভিন্ন পদক্ষেপ ও কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। অথচ বাংলাদেশের নিরাপত্তা আজ ঝুঁকিতে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের নীতি হলো শান্তিপূর্ণ পরিবেশে রোহিঙ্গাদের নিজের দেশে ফেরত পাঠানো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৭ সালে জাতিসংঘে সুনির্দিষ্ট পাঁচটি প্রস্তাব তুলে ধরেছিলেন। তার মধ্যে অন্যতম দুটি প্রস্তাব হলো- ক) রাখাইন রাজ্য থেকে জোরপূর্বক বিতাড়িত সব রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে তাদের নিজ ঘরবাড়িতে প্রত্যাবর্তন ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করা। খ) কফি আনান কমিশনের সুপারিশমালার নিঃশর্ত, পূর্ণ এবং দ্রুত বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা।
অবশ্য জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার সমালোচনার প্রেক্ষাপটে শরণার্থীদের যাচাই সাপেক্ষে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন অং সান সু চি। তবে রোহিঙ্গা সমস্যা ‘আসিয়ান’ কর্তৃক চিহ্নিত হয়েছিল ‘অভ্যন্তরীণ জাতিগত সহিংসতা’ রূপে। আসলে শেখ হাসিনার মতামত এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার কথা থেকে বলা যায় রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর কূটনৈতিক প্রচেষ্টা সবচেয়ে ভালো পথ। ফেরত পাঠানো না হলে সমস্যার বোঝা বাংলাদেশের জনগণকে বহন করতে হবে ভবিষ্যতে। ভাসানচরে তাদের জীবন আপাত শান্তিময় হলেও এদেশের জনজীবনে রোহিঙ্গারা বিষফোঁড়ায় পরিণত হতে পারে।
মানবতাবাদী নেত্রী শেখ হাসিনার নানাবিধ উদ্যোগের কারণে গত ৪ বছর ধরে বিশ্ববাসী রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় মিয়ানমারকে চাপে রাখার পক্ষে মতামত দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) ভূমিকা অগ্রগণ্য। ২০২০ সালের ২৩ জানুয়ারি রোহিঙ্গাদের গণহত্যার বিপদ থেকে সুরক্ষায় নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগের আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) সর্বসম্মতভাবে মিয়ানমারের প্রতি চার দফা অন্তর্বর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। ব্যবস্থাগুলো হচ্ছে- ক) গণহত্যা সনদের বিধি ২ অনুযায়ী মিয়ানমারকে তার সীমানার মধ্যে রোহিঙ্গাদের হত্যা, জখম বা মানসিকভাবে আঘাত করা, পুরো জনগোষ্ঠী বা তার অংশবিশেষকে নিশ্চিহ্ন করা এবং তাদের জন্মদান বন্ধের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ থেকে অবশ্যই নিবৃত্ত থাকতে হবে। খ). মিয়ানমারকে অবশ্যই তার সীমানার মধ্যে সেনাবাহিনী বা অন্য কোনো অনিয়মিত সশস্ত্র ইউনিট বা তাদের সমর্থনে অন্য কেউ যাতে গণহত্যা সংঘটন, গণহত্যার ষড়যন্ত্র, প্রকাশ্যে বা অপ্রকাশ্যে গণহত্যার জন্য উসকানি দেওয়া, গণহত্যার চেষ্টা করা বা গণহত্যার সহযোগী হতে না পারে, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।
গ) গণহত্যা সনদের বিধি ২-এর আলোকে গণহত্যার অভিযোগের সঙ্গে সম্পর্কিত সব সাক্ষ্যপ্রমাণ রক্ষা এবং তার ধ্বংস সাধনের চেষ্টা প্রতিরোধ করতে হবে। ঘ) এই আদেশ জারির দিন থেকে চার মাসের মধ্যে আদালতের আদেশ অনুযায়ী মিয়ানমার যেসব ব্যবস্থা নিয়েছে, তা আদালতকে জানাতে হবে। এরপর থেকে আদালতের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত প্রতি ছয় মাস পরপর এ বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে হবে। এগুলো মেনে চলা মিয়ানমারের জন্য বাধ্যতামূলক। তারা আইসিজের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবে না। তবে ওই আদেশ প্রত্যাখ্যান করেছে মিয়ানমার। সে দেশের সরকার ব্যবস্থা বলতে কিছুই নেই, সবই এখন সামরিক জান্তার আদেশনামা।
উল্লেখ্য, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর মিয়ানমার সরকারের দীর্ঘ কয়েক দশকের জাতিগত বৈষম্য ও নিপীড়ন এবং ২০১৭ সালের সেনা অভিযানের পটভূমিতে গাম্বিয়া আইসিজেতে সুরক্ষার আবেদন করে। পশ্চিম আফ্রিকার মুসলিম অধ্যুষিত দেশ গাম্বিয়া ২০১৭ সাল থেকে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চালানোর অভিযোগে ২০১৯ সালের নভেম্বরে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা করে। ২০১৯ সালের ১০ ডিসেম্বর থেকে নেদারল্যান্ডসে হেগের আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতে (আইসিজে) মিয়ানমারের গণহত্যা নিয়ে ওই মামলার প্রথম শুনানি শুরু হয়, চলে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত। শুনানির জন্য ওই সময় আদালতে হাজির হন মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি।
বিচারে মিয়ানমারের প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি। নির্যাতিত ও লাঞ্ছিত রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে আইনি লড়াইয়ে বাংলাদেশও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় অবতীর্ণ। রাখাইনের রোহিঙ্গাদের ওপর সংঘটিত নির্যাতন, গণহত্যা, ধর্ষণ আন্তর্জাতিক সালিশীর কতখানি পরিপন্থি সেটা যাচাই-বাছাইয়ের লক্ষ্যে ‘আইসিজে’ বিচারিক আদালতে বাদী-বিবাদী মুখোমুখি হয়। গাম্বিয়া বাংলাদেশের পার্শ্ববর্তী কোনো রাষ্ট্র নয়। কিন্তু প্রতিবেশী ভারত ও চীন যে মানবতার দৃষ্টান্ত রাখতে পারেনি তা ‘ওআইসি’র সমর্থনে একটি ক্ষুদ্র দেশ দেখিয়ে দিয়েছে। গাম্বিয়া বাদী হয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার নিপীড়িত রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়ে যে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে তা যেমন মনুষ্যত্বের অপার শক্তির প্রকাশ তেমনি অত্যাচার আর সহিংসতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর প্রতিবাদ হিসেবে তাৎপর্যবহ।
বাংলাদেশসহ সারা বিশ্ব রোহিঙ্গাদের মানবতা বিবর্জিত দুর্দশার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সোচ্চার হলেও মিয়ানমার নির্বিকার ও নিরুদ্বেগ। কোনো মতে এমন অত্যাচার আর বর্বরোচিত জঘন্য কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে বিন্দুমাত্র সুরাহার মনোবৃত্তি নেই। শান্তিতে নোবেল জয়ী অং সান সু চি ১১ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতে ছিলেন নির্বিকার, ভাবলেশহীন। অবশ্য আমাদের মনে রাখতে হবে, গাম্বিয়ার অভিযোগ উত্থাপনের আগেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেই মিয়ানমারের অমার্জনীয় অপরাধের বিরুদ্ধে সর্বপ্রথম বিশ্বসভায় অভিযোগ করতে হয়েছে। রোহিঙ্গাদের মানবিক দায়বদ্ধতায় আশ্রয় প্রদান থেকে শুরু করে সব ধরনের কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করায় শেখ হাসিনাকে বিশ্বসভায় অভিষিক্ত করা হয় ‘মানবতার জননী’ হিসেবে।
২০১৭ সালের আগস্ট মাসে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর সামরিক বাহিনীর নৃশংসতার ছবি, ভিডিও, নারী-শিশু-বৃদ্ধদের কান্না, চিৎকার, আহাজারি প্রভৃতি বিশ্বসহ এ দেশের সকলে দেখেছেন, জেনেছেন। সেই দেখায় পালিয়ে আসা মানুষের চোখের চাহনির যে আকুলতা বা ব্যাকুলতা তা গাম্বিয়াসহ বিশ্বের সবাইকে কাতর করেছিল। তবে তার আগে গত কয়েক দশকে তাদের সংখ্যা এ দেশে পাঁচ লাখের কাছে পৌঁছেছিল। সেই সংখ্যা বেড়ে বর্তমানে হয়েছে ১১ লাখের বেশি। আর শেখ হাসিনা সরকার সীমিত সাধ্য নিয়ে নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের বাঁচানোর এবং নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর। মানুষ হিসেবে আমরা অবশ্যই এই নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের পক্ষে কথা বলছি। উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৪ আগস্ট রাখাইনের ৩০টি পুলিশ পোস্ট ও একটি সেনা ক্যাম্পে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার পর সেখানে শুরু হয় সেনা অভিযান; এরপর বাংলাদেশ সীমান্তে নামে রোহিঙ্গাদের ঢল। জাতিসংঘের মতে বিশ্বের সবচেয়ে নিগৃহীত জনগোষ্ঠী হলো রোহিঙ্গা। বাংলাদেশে অবস্থানরত শরণার্থী বাদেও বর্তমানে প্রায় ৮ লাখ রোহিঙ্গা মিয়ানমারে বসবাস করে। সামরিক সরকার (১৯৬২ থেকে) তাদের অনেক মৌলিক অধিকার কেড়ে নিয়েছে। ২০১২ সালে ট্রেনে রোহিঙ্গা মুসলমান কর্তৃক একজন বৌদ্ধ ভিক্ষুণী ধর্ষণের জের ধরে সামরিক বাহিনী ও বৌদ্ধ ভিক্ষুদের দ্বারা পরিচালিত বর্বরতায় প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার রোহিঙ্গা মুসলিম দেশত্যাগ করে।
সে দেশ ছাড়াও বিভিন্ন সময় সামরিক জান্তার নির্যাতনের কারণে অতীতে দেশত্যাগ করতে বাধ্য হয়ে মালেশিয়ায় প্রায় ৫০ হাজার, বাংলাদেশে ৫ লাখ এবং প্রায় ৫ লাখ রোহিঙ্গা সৌদি-আরবে পালায়। ২০১৭ থেকে সেখানে সামরিক অভিযান চলানো হয় ‘মুসলমান রোহিঙ্গাদের নিশ্চিহ্ন করার নীলনকশা’ হিসেবে। ২০১৬ সালের ২২ অক্টোবর থেকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত উত্তরাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যের বিভিন্ন গ্রামের কমপক্ষে ৮৩০টি বাড়িঘর আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। একথা সত্য এসব অত্যাচার-নিপীড়নের ফলে সেখানে জন্ম নিয়েছে রোহিঙ্গা বিপ্লবীগোষ্ঠী। কিন্তু সেই বিপ্লবীগোষ্ঠীকে আমরা সমর্থন করি না। কারণ মিয়ানমারের সার্বভৌমত্বে বিশ্বাসী আমরা। তবে অসহায় ও নির্যাতিত এবং বাস্তুচ্যুত মানুষের পাশে থাকা আমাদের মানবিক দায়িত্ব।
জননেত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বের কারণে ২০১৭ সাল থেকেই রোহিঙ্গাদের নির্যাতন-নিপীড়নের সমস্যা সারা বিশ্বব্যাপী সুশীল সমাজের মনে আলোড়ন সৃষ্টি করে। তখন থেকে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা তাদের সমস্যা সমাধানের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। আট নোবেলজয়ী ব্যক্তিত্ব রোহিঙ্গা গণহত্যার স্বীকৃতি দিতে সু চিকে আহ্বান জানিয়েছেন। বাংলাদেশের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ শান্তিতে নোবেল বিজয়ীরা হলেন- শিরিন এবাদি (ইরান-২০০৩), লেমাহ গবোযি (লাইবেরিয়া-২০১১), তাওয়াক্কল কারমান (ইয়েমেন-২০১১), মাইরিড মাগুয়ের (উত্তর আয়ারল্যান্ড-১৯৭৬), রিগোবার্তো মেনচু তুম (গুয়াতেমালা-১৯৯২), জোডি উইলিয়ামস (যুক্তরাষ্ট্র-১৯৯৭) ও কৈলাশ সত্যার্থি (ভারত-২০০৬)। শান্তির পক্ষের মানুষ হিসেবে অং সান সু চির প্রতি তারা আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, তিনি যেন রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে চলা বৈষম্য অবসানের ব্যবস্থা নেন এবং রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব, ভূমির মালিকানা, চলাচলের অধিকার এবং অন্যান্য মৌলিক অধিকার নিশ্চিতে কাজ করেন। জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনান নিজে রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়ান এবং তাদের নিয়ে রিপোর্ট তৈরি করেন। কিন্তু অং সান সু চি নিজের দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠায় কোনো অবদান রাখতে পারেননি।
আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতে গাম্বিয়ার আইনমন্ত্রী তামবাদু বলেছিলেন, ‘আমরা কেবল রোহিঙ্গাদের অধিকারের সুরক্ষাই চাই না বরং গণহত্যা কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে মিয়ানমারকে গণহত্যা না চালাতে বাধ্য করে নিজেদের অধিকারও অক্ষুণ্ন রাখতে চাই।’ গণহত্যার কনভেনশনের অধীনে মিয়ানমার তার দায়বদ্ধতা লঙ্ঘন করেছে এবং করে যাচ্ছে; চলমান গণহত্যা বন্ধ করতে হবে এবং দায়বদ্ধতার প্রতি পূর্ণ সম্মান জানাতে হবে- আদালতকে এমন ঘোষণা দেওয়ার আবেদন জানিয়েছিল গাম্বিয়া। গাম্বিয়া যুক্তি দেখিয়ে বলেছিল, মিয়ানমার ২০১৭ সালের আগস্ট থেকে শুদ্ধি অভিযানের নামে ধারাবাহিকভাবে এবং ব্যাপকভাবে নৃশংসতা চালিয়ে গেছে, যেটি গণহত্যার পর্যায়ে পড়ে। গাম্বিয়ার আইনজীবীরা মিয়ানমারে ব্যাপক ধর্ষণ, হত্যা এবং বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া এবং রোহিঙ্গা শিশু হত্যার বিবরণ আদালতে তুলে ধরে।
গাম্বিয়ার অভিযোগ এবং ১০ থেকে ১২ ডিসেম্বর তিন দিনের নির্ধারিত শুনানির পর আন্তর্জাতিক অঙ্গনে চাপে পড়ে মিয়ানমার। বিশেষ করে দেশটির সেনাবাহিনী ও বেসামরিক সরকার তখন থেকে রোহিঙ্গা বিষয়ে সঠিক পথে থাকতে বাধ্য হয়। কোনো বিতর্কিত কাজ করে আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে পার পাওয়া আর সম্ভব হয়নি। আবার রোহিঙ্গা সংকট পরিস্থিতির উন্নতিতে মিয়ানমার কী পদক্ষেপ নিচ্ছে, সেটিও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে জানাতে হবে নিয়মিত বিরতিতে। আর গণহত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সবচেয়ে বড় সমস্যায় পড়েছে মিয়ানমার। পশ্চিমা দেশগুলোর সমর্থন হারিয়েছে তারা। আসতে পারে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক নানা নিষেধাজ্ঞা। শুধু চীনা ঢালে ভবিষ্যতে আর রক্ষা পাবে না সু চির দেশ। অর্থাৎ মিয়ানমার আইসিজের চার দফা অন্তর্বর্তী ব্যবস্থা মেনে নিয়ে বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এখন।
মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টির এই আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদান হিসেবে গণ্য হচ্ছে। কারণ তিনি ২০১৭ সাল থেকে জাতিসংঘ এবং অন্যান্য প্ল্যাটফর্মে রোহিঙ্গা সংকটের গুরুত্ব বোঝাতে সক্ষম হয়েছেন। এখন প্রত্যাবাসনের মধ্য দিয়ে নিজ দেশে শান্তিতে বসতি স্থাপন করতে পারলে রোহিঙ্গা সংকটের আপাতত সমাধান হয়েছে বলে আমরা মনে করব।
লেখক : মিল্টন বিশ্বাস , অধ্যাপক, কলামিস্ট
- বান্দরবান সদরে আব্দুল কুদ্দুছ আলীকদমে জামাল উদ্দীন চেয়ারম্যান নির্বাচিত
- সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন- চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুছ,ভাঃচেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ,মেহাইনু মারমা
- বান্দরবানে কেএনএফের আরও দুই সদস্য কারাগারে
- বান্দরবানে বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে ভোটকেন্দ্রে ভোটারের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ
- ভোট কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা হলে কেন্দ্র বন্ধ করে দেয়া হবে - বান্দরবান জেলা প্রশাসক
- গ্রামে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
- টাঙ্গাইল শাড়ির স্বত্ব রক্ষায় ভারতে আইনজীবী নিয়োগ
- বদলে যাচ্ছে পাঠদানব্যবস্থা
- সুন্দরবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে, ড্রোনের মাধ্যমে মনিটরিং
- স্বাধীন ফিলিস্তিনের দাবিতে ছাত্রলীগের মিছিল-সমাবেশ
- অর্থনীতির গেম চেঞ্জার মাতারবাড়ী
- টিসিবির পণ্য আজ থেকে বিক্রি শুরু
- বাতিল হচ্ছে রিটার্ন অ্যাসেসমেন্ট প্রথা
- সরকার বিনিয়োগকারীদের সব সুবিধা নিশ্চিতকরণে বদ্ধপরিকর
- উপজেলা নির্বাচনে দেড় লাখ আনসার-ভিডিপি সদস্য মোতায়েন
- বান্দরবানে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের অনুদানের চেক বিতরণ
- নাইক্ষ্যংছড়ি অগ্নিকান্ডে ৮ দোকান ও বাসাবাড়ি পুড়ে ছাই
- সশস্ত্র বাহিনীকে আরো উন্নত করাই আমাদের লক্ষ্য
- রোহিঙ্গা মামলা চালাতে আর্থিক সহায়তার আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
- মেয়াদোত্তীর্ণ ইউনিয়নে বসবে প্রশাসক
- প্রত্নসম্পদের ক্ষতি করলে ১০ বছর কারাদণ্ড
- ৩০ হাজার বীর মুক্তিযোদ্ধার পরিবারকে আবাসন সুবিধা দেবে সরকার
- প্রবাস আয় বাড়ানোর জন্য রেমিট্যান্স কার্ড প্রবর্তনের সুপারিশ
- সংশোধিত বাজেটে কৃষি খাতে ভর্তুকি ৮ হাজার কোটি টাকা বেড়েছে
- সুদের হার বাজারভিত্তিক করা হবে গভর্নর
- সংকটেও উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য বাংলাদেশ রোল মডেল
- হাওরে ধান কাটা হলো সারা, কৃষক পরিবারে স্বস্তির হাসি
- অবশেষে ‘অবৈতনিক’ হচ্ছে নিম্ন মাধ্যমিক স্তর
- নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে আহত ৩ জন
- উপজেলা নির্বাচন উৎসবমুখর দেখতে চাই - প্রধানমন্ত্রী
- উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেয়ায় বান্দরবানে বিএনপির ৫ নেতা বহিষ্কার
- নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে আহত ৩ জন
- অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন অক্লান্ত পরিশ্রম করছে- জেলা প্রশাসক
- বদলি হলেও চাকরিতে যোগদান করেননি নাথান বমের স্ত্রী
- ভোট কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা হলে কেন্দ্র বন্ধ করে দেয়া হবে - বান্দরবান জেলা প্রশাসক
- কেএনএফের ২ জনকে রিমান্ড শেষে জেল হাজতে প্রেরণ
- মিয়ানমারের সেনাসহ ২৮৮ জনকে ফেরত পাঠাল বিজিবি
- প্রধানমন্ত্রী আজ দেশে ফিরছেন
- বান্দরবানে মে দিবস উদযাপন
- বৃষ্টির জন্য আগামীকাল বান্দরবানে নামাজ অনুষ্ঠিত হবে
- পরিবহন ধর্মঘটে বান্দরবানে দূরপাল্লার যানবাহন চলাচল বন্ধ, ভোগান্তিতে যাত্রীরা
- হুট করে হামলা শক্তির চেয়ে নিজেদের দুর্বলতার বহিঃপ্রকাশ
- বান্দরবানে সেনা অভিযানে কেএনএর সন্ত্রাসী নিহত
- বৃষ্টিতে স্বস্তি নগরজুড়ে
- বান্দরবানে প্রিজাইডিং, সহকারী প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসারদের প্রশিক্ষণ
- রুমায় সেনা অভিযানে দুই কেএনএ সন্ত্রাসী নিহত
- বান্দরবান পৌর এলাকায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড
- স্বামী সংসার স্বাভাবিক করতে সহযোগিতা চায় রুনা ত্রিপুরা
- বান্দরবানে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের অনুদানের চেক বিতরণ
- আমাকে সরিয়ে তারা কাকে আনবে?