শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||
চৈত্র ১৫ ১৪৩০
|| ১৮ রমজান ১৪৪৫
দৈনিক বান্দরবান
প্রকাশিত: ১৫ মে ২০২২
এবারে বলতে হচ্ছে দুই দেশের মেগা প্রকল্পের ব্যয় ও বাস্তবতার কথা জুনেই বাংলাদেশে চালু হতে যাচ্ছে আমাদের স্বপ্নে পদ্মা সেতু।একই সাথে আরো চালু হতে যাচ্ছে বঙ্গবন্ধু টনেল,মেট্রোরেলসহ আরো বেশ কিছু অর্থনৈতিক অঞ্চল। এবং এই অর্থনৈতিক অঞ্চল ও মেগা প্রকল্প গুলো বাস্তবায়ন ঘটলে কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এই প্রকল্প গুলো আমাদের দেশের জন্য একটি ভালো রকমের দেশজ উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।গত ১৫ বছরে শ্রীলংকার সরকার বিমানবন্দর,রাস্তাঘাট,সমুদ্রবন্দর সহ একাধীক প্রকল্প গ্রহণ করেছে। এমন কি শ্রীলংকার রাজধানী কলম্বো নিকট থেকে সমুদ্র থেকে ভুমি উদ্ধার করে প্রথমে একটি শহর তৈরি করা হলে যার নাম দেয়া হয়েছে ফোরসিটি। আর এই ফোরসিটি কাজ শেসে করতে করতে সময় লাগবে প্রায় ২৫ বছর । এবং যার উন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে দেড় মিলিন ডলার। বলা হচ্ছে এই ফোর সিটি নাকি টেক্কা দেবে হংকন,দুবাইসহ সিঙ্গাপুরকে পর্যন্ত।বিগত দিন গুলোতে এই ফোর সিটি তৈরি করার জন্য শ্রীলংকার সরকার বিভিন্ন উৎসহ থেকে একাধীক ঋণ গ্রহণ করেছেন। কন্তিু এই পর্যন্ত বিপুল পরিমান ঋণ গ্রহণ করেছে। এতো ঋণ গ্রহণ করার পরও এখন পর্যন্ত শ্রীলংকার সরকার কোন লাভের মূখ দেখতে পারেন নি।এমন কি গত ১ দশকে শুধুমাত্র চীনের কাজ থেকে শ্রীলংকার সরকার এই প্রকল্পের জন্য ঋণ নিয়েছেন প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলার।যা তাদের মোট ঋণের পরিমানের ১০ শতাংশ।
অন্যদিকে বাংলাদেশের নেয়া মেগা প্রকল্প পদ্মা সেতু মেট্রোরেল,বঙ্গবন্ধু টানেল,এলিভেটড এক্সপ্রেসওয়ে,মাতারবাড়ি কলা বিদ্যুৎ কেন্ত্র,রুপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র,রামপাল কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ যেসকল বড় ধরণের মেগা প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। তার প্রতিটি বাংলাদেশের জন্য অতিব প্রয়োজনীয়। এমন কি প্রকল্প গুলোর কাজ শেষে হলে ঠিক তখনই বাংলাদেশ তার রিটার্ন পাবে।একেই সাথে সাথে বিনিয়োগ বাড়বে।অর্থনৈতিক চাকা আরো তমূল ভাবে ঘুরতে শুরু করবে। এবং দেশজ উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে বাংলাদেশের ছোট বড় প্রায় সকল প্রকল্পের কিন্ত বিশ্বব্যংক,এডিবির মত প্রতিষ্টান গুলো ঋণ এবং অর্থের প্রবাহ যোগিয়েছে।বলতেই হয় এসকল প্রতিষ্টান গুলোর সৃদের হার কিন্তু অনেক অল্প একেই সাথে একটি দীর্ঘমেয়াদী ঋণ সুবিধায় তাদের ঋণ গুলো পরিশোধ করা যায়। এমন কি বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে। তাদের কাজ থেকে নেয়া ঋণ গুলো অন্যান্য প্রকল্পের অনুদান হিসেবে ব্যবহারিত হয়েছে।যেমনটি খুব বেশি করে থাকে জায়কার মত প্রতিষ্টান। অন্যদিকে শ্রীলংকার সরকার চীনের কাজ থেকে সাবলাইস কেডিট ঋণের বিনিময় তাদের একাধীন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। এই ঋণের মাধ্যমে যেই টাকা দিবে তার কাছ থেকে শ্রীলংকা কে পণ্যে গ্রহণ করতে হবে। একদিকে এই ঋণের সুদের পরিমাণ যেমন বেশি তেমনি এই ঋণ গ্রহণের মাধ্যমে শ্রীলংকা কে অনেক অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প তাদের নিজ দেশের ব্স্তবায়ন করতে হয়ে্ছে। আর এই সকল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে গিয়ে আজকের শ্রীলংকার এমন বেহাল দশা।
জানুয়ারীত শ্রীলংকার সরকারের রেমিট্যান্স প্রাপ্তির পরিমাণ ছিল ২৭ কোটি ১০ লক্ষ ডলার। আর বাংলাদেশ ব্যংকের তথ্য মতে মার্চ মাস পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকারের রেমিট্যান্স প্রাপ্তির পরিমাণ ছিল ১৮৬ কোটি ডলারের। এমন কি করোনাকালীন সময়েও ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে বাংলাদেশে রের্কড পরিমাণ প্রায় ২৪.৭৮ বিলিয়ন ডলারে রেমিট্যান্স যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশের নিজস্ব তহবিলে।
এবারে তুলে ধরতে হয় দুই দেশের রপ্তানী আয়ের তুলনা।করোনা মহামারী এবং রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যেও বাংলাদেশ চমক দেখিয়েছে তাদের রপ্তানী আয়ের ক্ষেত্রে। গত অর্থ বছরে আমাদের প্রবৃদ্ধির পরিমাণ ছিল ১৭ শতাংশের ও বেশি অথচ চলতি অর্থবছরে মাত্র ৯ মাসে যে প্রবৃদ্ধির পরিমাণ দাড়িঁছে দ্বিগুণের কাছাকাছি যার পরিমাণ ৩৩.৪১ শতাংশ।অন্যদিকে শ্রীলংকার রপ্তানী আয়ের পরিমাণ যেমন করুন তারচেয়ে বেশি করুন তাদের রেমিট্যান্সে প্রাপ্তির পরিমাণও।মার্চ মাসে বাংলাদেশের রপ্তানী আয়ের পরিমাণ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ রপ্তানী উন্নয়ন ব্যারো। তাতে দেখা যায় শুধু মাত্র মার্চেই বাংলাদেশের রপ্তানী পণ্যে থেকে আয় হয়েছে ৪.৭৬ বিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে জানুয়ারিতে শ্রীলংকার পণ্য রপ্তানী থেকে আয় কমেছে ১.১ বিলিয়ন ডলার। অথ্যৎ বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাস চলাকালীন সময় শ্রীলংকার রপ্তানী আয় যেখানে ধ্বস নেমেছে ।ঠিক এই সময় বাংলাদেশ করোনা কে শক্তহাতে মোকাবেলঅ করেছে।তাই বলতেই হয় করোনা এই সময় পর্যন্ত বাংলাদেশের রপ্তানী আয় আরো দিন দিন বেড়েই চলছে।
শ্রীলংকার রির্জাভ অর্থনীতির সাথে বাংলাদেশের রির্জাভ অর্থনীতির তুলনা মূলখ অবস্থান। ৪ এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশের রির্জাভ অর্থনীতির পরিমাণ ছিল প্রায় ৪৪.৪০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। অন্যদিকে শ্রীলংকার রির্জাভ অর্থনীতির পরিমাণ ছিল মাত্র ২ বিলিয়ন ডলারেরও কম।যেখানে শ্রীলংকারই জানুয়ারিতে রির্জাভ অর্থনীতির পরিমাণ ছিল ২.৩৬ বিলিয়ন ডলার।অথৎ করোনা কালীন যে দূর্যোগে শ্রীলংকার রির্জাভ অর্থনীতির পরিমাণ যে তলানিতে নেমে এসেছে,সিই র্দূযোগকে বাংলাদেশ সঠিক ভাবে মোকাবেলা করেছে। এমন কি করোনা কালীন সময় বাংলাদেশের রির্জাভ অর্থনীতি রের্কড পরিমাণে দাড়িঁয়ে ছিল। যার পরিমাণ ছিল প্রায় ৪৮ বিলিয়নের ও বেশি। এবং একই সাথে বলতে হয় শ্রীলংকা তাদের রির্জাভ তহবিলে অর্থের যোগান বাড়াতে বাংলাদেশের কাছ থেকে ২৫ কোটি ডলারের একটি ঋণ গ্রহণ করেন। এমন কি ইতোমধ্যে তারা আবারো নতুন করে ২৫ কোটি ডলারের আরো একটি ঋণের জন্য আবেদন করেছে বাংলাদেশের কাছে। শ্রীলংকার কৃষিতে যখন ব্যথ্যতা, ঠিক তখনই বাংলাদেশের কৃষিতে নৃত্য নতুন সফলতা। ২০১৯ সালে ক্ষমতাসীন হওয়ার পর শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট রাজাপাকশা তার নিজ দেশে কৃষি ব্যবস্থায় নতুন একটি পন্থা চালু করেন।যে পন্থার নাম অর্গানিক কৃষি ব্যবস্থা। এই কৃষি ব্যবস্থায় রাজাপাকশা তার দেশের সকল কৃষি পণ্যের উৎপাদনে রাসায়নিক/কিডনাশক ব্যবহার নিষিদ্ধ করেন।কিন্তু এই নতুন কৃষি ব্যবস্থা প্রচলনের মাধ্যমে শ্রীলংকা তাদের চাল উৎপাদনে হিমশিম খেতে থাকে। এরপর দেশেটি প্রেসিডেন্ট রাজাপাকশার ভুল সিদ্ধান্তের গ্রহণের কারণে শ্রীলংকার সরকার বাধ্য হয় অর্ধ বিলিয়ন ডলারের বিনিময় দেশিটিতে চাল আমদানী করতে।যার দরুন এক সময় দেশটিকে চালের দাম ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পায়। এবং চালের পাশাপাশি অর্গানিক কৃষি ব্যবস্থার কারণে দেশটি তে চা উৎপাদন ও ব্যাপক ভাবে নেতিবাচক প্রভাব দেখা দেয়।অন্যদিকে বাংলাদেশ চাল উৎপাদনে যেন স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং সে সাথে উৎপাদনের পরিমাণ ও দিন দিন বেড়েই চলছে।এবং বলতেই হয় সরকারী খাদ্য গুদাম গুলোতে অতীতে যে কোন সময়ের তুলনায় বেশি খাদ্য মজুত আছে।যার পরিমাণ প্রায় ২০ লাখ টনের ও বেশি।কাজেই বাংলাদেশ কে অন্তত খাদ্য সংকট নিয়ে কোন প্রকার ভাবতে হচ্ছে না।সবশেষে বলতে হচ্ছে শ্রীলংকা বর্তমানে তাদের অর্থনীতিতে মুদ্রস্মুতি কারণে চরম মন্দা অবস্থায় ভোগছে । যা বাংলাদেশের ক্ষেত্রে সেরকম মুদ্রস্মৃতি ঘটনার কোন সম্ভাবনা নেই।
dainikbandarban.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়