শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ৬ ১৪৩১
|| ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
দৈনিক বান্দরবান
প্রকাশিত: ১৪ জুলাই ২০২২
জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০১৯ সালের ১৪ জুলাই ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে দলটি। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় জাতীয় পার্টি কেন্দ্রীয় কার্যালয় কাকরাইল চত্বরে এরশাদের প্রতিকৃতিতে জাতীয় পার্টি ও বিভিন্ন অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠন পুষ্পস্তবক অর্পণ করবে। দুপুর পর্যন্ত সেখানে পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত করা হবে। বিকেল ৩টায় কাকরাইল চত্বরে স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। স্মরণ সভায় সভাপতিত্ব করবেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও সংসদের বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের। স্মরণ সভায় জাতীয় পার্টি মহাসচিব মো: মুজিবুল হক চুন্নু এমপিসহ শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত থাকবেন। স্মরণ সভা শেষে বিকেলে দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হবে বলে জানিয়েছে জাতীয় পার্টি। আগামীকাল শুক্রবার বিকেল ৩টায় রাজধানীর শ্যামপুর জুরাইন রেলগেটে এরশাদের স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জিএম কাদের। পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও জাতীয় পার্টি ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি এতে সভাপতিত্ব করবেন। অনুষ্ঠান শেষে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের মাঝে খাবার বিতরণ করা হবে। এরশাদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক শেষ করে ১৯৫২ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। মুক্তিযুদ্ধের পর পাকিস্তান থেকে প্রত্যাবর্তন করে ১৯৭৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদে পদোন্নতি লাভ করেন। ওই বছরের আগস্টে মেজর জেনারেল পদে পদোন্নতি দিয়ে তাকে সেনাবাহিনীর উপপ্রধান হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। ১৯৭৮ সালের ডিসেম্বরে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সেনাবাহিনীর প্রধান হন। ১৯৭৯ সালে তিনি লেফটেন্যান্ট জেনারেল পদে পদোন্নতি লাভ করেন। তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার প্রেক্ষিতে ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ রাষ্ট্রক্ষমতা গ্রহণ করেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। দীর্ঘ ৯ বছর দেশ পরিচালনা শেষে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর গণআন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেন। ‘স্বৈরাচার’ খেতাব পাওয়া এরশাদ ১৯৯১ সালে গ্রেফতার হন। অন্তরীণ থাকা অবস্থায় ওই বছরই রংপুরে জাতীয় সংসদের পাঁচটি আসনে বিজয়ী হন। কারাগারে থেকেই ১৯৯৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও অংশ নিয়ে তিনি পাঁচটি আসনে জয়ী হন। ১৯৯৭ সালের ৯ জানুয়ারি জামিনে মুক্ত হন এরশাদ। ২০০১ সালের অষ্টম ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নবম, ২০১৪ সালে দশম ও চলতি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। রংপুরে শুরু হয়নি স্মৃতি কমপ্লেক্স নির্মাণের কাজ রংপুর অফিস জানায়, এরশাদের মৃত্যুবার্ষিকীকে ঘিরে রংপুর এবং সারা দেশে দলের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। দলের নেতারা বলছেন, এরশাদের কর্ম ও আদর্শ ছড়িয়ে দিতে একটি স্মৃতি কমপ্লেক্স কাম গবেষণাগার প্রাতিষ্ঠার দাবি থাকলেও তা এখনো শুরু না হওয়ায় নেতাকর্মীরা হতাশ। অন্য দিকে এরশাদের স্বপ্নের প্রাদেশিক সরকার বাস্তবায়নে আন্দোলনে নামতে কেন্দ্রকে চাপ দেয়ার কথা জানিয়েছেন স্থানীয় নেতারা। দিনটি উপলক্ষে রংপুরসহ সারা দেশে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে দলটি। সকাল ৬টায় এরশাদের কবরে, জাতীয় পার্টির সারা দেশের দলীয় কার্যালয়ে কুরআনখানির মাধ্যমে শুরু হবে কার্যক্রম। সোয়া ৬টায় রংপুর সেন্ট্রাল রোডের কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। বাদ আসর তার কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা দোয়া এবং আলোচনা সভা করবে মহানগর ও জেলা জাতীয় পার্টি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন। পরে আলোচনায় সভা অনুষ্ঠিত হবে। এ দিকে বিবৃতিতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেন, যারা বলেছিলেন এরশাদের মৃত্যুর পর জাতীয় পার্টির অস্তিত্ব থাকবে না, তাদের কথা মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। কারণ এরশাদ ছিলেন একজন কিংবদন্তি রাজনীতিক নেতা। তার আদর্শ ও কর্মের স্পিড তার মৃত্যুর পরে রাষ্ট্রকাঠামোসহ সব ধারার রাজনীতিবিদরা স্বীকার করে নিয়েছেন। তিনি আধুনিক ও উন্নত বাংলাদেশের রূপকার। পবিত্র হজ পালনে থাকা প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রংপুর মহানগর সভাপতি এবং সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা ওয়াটসঅ্যাপে জানান, এরশাদের স্বপ্ন ছিল একটি দেশের সম উন্নয়নের জন্য প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ। সেজন্য তিনি উপজেলা পরিষদ গঠন করেছিলেন। তার স্বপ্ন ছিল শুধু ঢাকা সব কিছুর কেন্দ্রবিন্দু হবে না। সে কারণে তিনি সারা দেশকে সাতটি প্রদেশে বিভক্ত করার পরিকল্পনার কথা বলেছিলেন। আমরা জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা এরশাদের সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমেই তাকে স্মরণে রাখতে চাই। জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ এবং দলটির সাবেক মহাসচিব, প্রেসিডিয়াম সদস্য মসিউর রহমান রাঙ্গা এমপি বলেন, এরশাদের হাত ধরেই বাংলাদেশে উন্নয়ন ও অগ্রগতির সূচনা হয়েছিল। সেই ধারা বাস্তবায়ন করতে সারা বাংলাদেশে আমরা বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে কাজ করতে চাই।
dainikbandarban.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়