শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ৭ ১৪৩১
|| ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
দৈনিক বান্দরবান
প্রকাশিত: ২০ আগস্ট ২০২১
একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জনের মধ্য দিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা তাঁদের যুদ্ধ শেষ করলেও পরাজিত পাকিস্তান, তাদের মিত্র ও এদেশীয় দোসররা কখনো থেমে থাকেনি। তারা স্বাধীন দেশটির বিরুদ্ধে ও স্বাধীনতাযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে নানা রকম ষড়যন্ত্রের জাল বুনতে থাকে। ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত সারা দেশে কয়েক শ নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় চূড়ান্ত আঘাত হেনেছিল ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। বঙ্গবন্ধুকে নির্বংশ করার লক্ষ্যে তাঁর শিশুসন্তানকে পর্যন্ত হত্যা করা হয়। বিদেশে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান তাঁর দুই কন্যা। এরপর তাঁদেরও হত্যা করার জন্য একের পর এক ষড়যন্ত্র চলে। তারই অংশ ২১ আগস্ট। জাতির জনকের সুযোগ্য কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের জনসভায় গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। আল্লাহর অশেষ রহমতে শেখ হাসিনা প্রাণে বেঁচে গেলেও আওয়ামী লীগ নেত্রী এবং সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নেতাকর্মী নিহত হন, আহত হন দুই শতাধিক নেতাকর্মী। অনেকে চিরতরে পঙ্গু হয়ে গেছেন। রক্তাক্ত ইতিহাসের সাক্ষী আগস্ট মাস। একাত্তরের পরাজিত শক্তি এই মাসকেই বেছে নিয়েছিল তাদের প্রতিশোধের স্পৃহা চরিতার্থ করার জন্য।
২১ আগস্টের ঘটনা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছিল না। এটিও ছিল স্বাধীনতার সপক্ষ শক্তিকে নির্মূল করার আরো একটি অপপ্রয়াস। তখন ক্ষমতায় ছিল বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বাধীন সরকার। তদন্তে উঠে এসেছে, হাওয়া ভবনে তারেক রহমানের উপস্থিতিতে দফায় দফায় বৈঠকে এই হামলার পরিকল্পনা সাজানো হয়েছিল। জঙ্গিগোষ্ঠী হরকাতুল জিহাদকে (হুজি) হামলা পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। হুজি নেতা মুফতি হান্নান তাঁর জবানবন্দিতে এই পরিকল্পনার বিস্তারিত তথ্য দিয়েছেন। এর সঙ্গে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীসহ বিএনপি ও জামায়াতের আরো কিছু নেতা সম্পৃক্ত ছিলেন। জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা (এনএসআই) এবং পুলিশের কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাও সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলেন পরিকল্পনার সঙ্গে। তাই দীর্ঘ সময় ধরে হামলা চালিয়েও হামলাকারীরা নির্বিগ্নে পালিয়ে যেতে পারে। অবিস্ফোরিত গ্রেনেডসহ মামলার আলামতগুলো দ্রুত নষ্ট করে ফেলা হয়। বিএনপি-জামায়াত নেতারা একে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল বলে গলা ফাটাতে থাকেন।
বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার একই পরিকল্পনা থেকে শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্যও একের পর এক হামলার ঘটনা ঘটছে। এর আগে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় শেখ হাসিনার জনসভার মঞ্চের পাশে ৭০ কেজি ওজনের বোমা পুঁতে রাখা হয়েছিল। কিন্তু বিস্ফোরণের আগেই সেটি ধরা পড়ে যায়। ২১ আগস্টের ঘটনাও ছিল সেই ধারাবাহিক পরিকল্পনারই অংশ। এদের ষড়যন্ত্র থেমে নেই। ১৪ বছর পর নিম্ন আদালতে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় হয়েছে। আমরা আশা করি দ্রুত এই মামলার রায় কার্যকর করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা হবে।
dainikbandarban.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়