ডায়াবেটিস এবং ইনসুলিন
দৈনিক বান্দরবান
প্রকাশিত: ২১ নভেম্বর ২০২২
প্রতিবছর এই দিনে বিশ্বজুড়ে পালিত হয় দিবসটি। উদ্দেশ্য, ডায়াবেটিসের ভয়াবহতা সম্পর্কে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়িয়ে তোলা। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য বিষয়- ‘আগামীর সুরক্ষায় ডায়াবেটিস শিক্ষা’। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশেও সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে এবং দিবসটি যথারীতি পালন করা হচ্ছে।
ডায়াবেটিস অত্যন্ত জটিল একটি রোগ। একবার আক্রান্ত হয়ে গেলে এ থেকে মুক্তির আর কোনো পথ খোলা থাকে না। অর্থাৎ রোগটি নিয়ন্ত্রণে রেখে সুস্থ জীবনযাপন করা যায় বটে। কিন্তু পুরোপুরি নির্মূল করা কখনোই সম্ভব হয় না। নির্মূল করার চিকিৎসা পদ্ধতি আজও বিশ্বের কোথাও আবিষ্কৃত হয়নি। তাই আমাদের উচিত রোগটির ভয়াবহতা বিবেচনা করে রোগমুক্ত থাকার পদক্ষেপ গ্রহণ করা। আর একবার হয়ে গেলে তা নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতি জেনে জীবনযাপন করা।
ডায়াবেটিসে শরীরে নানা রোগ বাসা বাঁধে। কোনো কোনো রোগীকে ইনসুলিন গ্রহণ করতে হয়, যা রোগীকে বিরক্তিকর পরিস্থিতির মুখোমুখি করে। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত বেশির ভাগ রোগী অন্তত ইনসুলিন গ্রহণ থেকে মুক্তি পেতে চান। কেননা ইনসুলিন গ্রহণে নিয়মিত শরীরে সিরিঞ্জের সুই ফোটাতে হয়। আসুন, ডায়াবেটিস এবং ইনসুলিন সম্পর্কে কিছু জেনে নেওয়া যাক।
আপনি কি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত?
খাওয়ার পরে রক্ত পরীক্ষায় শর্করার মাত্রা যদি ৭.৮ মিলিমোল/লিটারের বেশি হয়, তাহলে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত বলতে হবে। আরেকটি পরীক্ষা হলো-HbA1C (তিন মাসের গড় শর্করা)। এই পরীক্ষায় শর্করার মাত্রা যদি ৬.৫ এর বেশি থাকে, তাহলেও ধরে নিতে হবে আপনি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত।
খালি পেটে, ভরা পেটে আলাদাভাবে দেখা যাক-
খালি পেটে
খালি পেটে (৮-১০ ঘণ্টা পেট খালি থাকা আবশ্যক) শিরা থেকে নেওয়া রক্তে শর্করার মাত্রা ৫.৫ মিলিমোল/লিটারের মধ্যে থাকা ভালো। কোনো ব্যক্তির শর্করার মাত্রা যদি ৬.১ থেকে ৬.৯ মিলিমোল/লিটারের মধ্যে থাকে, তাহলে তিনি ‘প্রি-ডায়াবেটিক’ অবস্থায় আছেন। ‘প্রি-ডায়াবেটিক’ বলতে টাইপ-২ ডায়াবেটিস হওয়ার উচ্চ ঝুঁকি এবং হৃদরোগসহ বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। ‘প্রি-ডায়াবেটিক’ অবস্থাকে সতর্কবার্তা হিসেবে ধরে নিয়ে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের দিকে মনযোগী হতে পারেন।
ভরা পেটে
ভরা পেটে বা খাওয়ার ২ ঘণ্টা পরে রক্তে শর্করার মাত্রা কিছুটা বেড়ে যাওয়া স্বাভাবিক। তবে এই মাত্রা ৭.৮ মিলিমোল/লিটারের বেশি বেড়ে গেলে ‘প্রি-ডায়াবেটিক’ অবস্থা ধরে নিতে হবে। আর ১১.১ মিলিমোল/লিটারের বেশি হলে তাকে ডায়াবেটিস আক্রান্ত বলা যায়।
কখন এবং কেন ইনসুলিন নিতে হবে?
# অনেকের প্রথম দিকে রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি ধরা পড়ে। রক্তে শর্করা ১৬.৭ মিলিমোল বা ৩০০ গ্রাম/ডেসিলিটারের বেশি বা HbA1C (গড় শর্করা) ১০ শতাংশের বেশি হলে ইনসুলিন দিয়ে আগে নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। এ অবস্থায় ডায়াবেটিসের মুখের ওষুধ কার্যকর নয়। বরং নানা জটিলতা দেখা দিতে পারে।
# টাইপ-১ ডায়াবেটিসে মুখের ওষুধ কাজ করে না। এ ধরনের রোগীদের ইনসুলিনের উপর নির্ভরশীল হওয়ার গত্যন্তর নেই।
# ধরুন, কেউ দীর্ঘদিন (সর্বনিম্ন তিন ধরনের ওষুধ) সর্বোচ্চ মাত্রায় সেবনের পরেও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না থাকলে একে ‘ওরাল হাইপোগ্লাইসেমিক এজেন্ট ফেইলিওর’ বলে। এমন পরিস্থিতিতে বুঝতে হবে-ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে মুখের ওষুধে কাজ হচ্ছে না এবং অগ্ন্যাশয়ে যথেষ্ট ইনসুলিন উৎপাদন হচ্ছে না। এ ধরনের রোগীকেও ইনসুলিন নিতে হবে।
# গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস নির্ণয় হলে ইনসুলিন গ্রহণ করতে হবে। এ ছাড়া গর্ভধারণে আগে থেকেই জ্ঞাত ডায়াবেটিস রোগী গর্ভধারণ করলেও তাকে ইনসুলিন গ্রহণ করতে হবে। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মায়েরা শিশুকে দুধ পান করালে ডায়াবেটিসের অন্যান্য ওষুধের চেয়ে ইনসুলিন গ্রহণ সবচেয়ে বেশি উপযোগী।
# কিডনি ও যকৃতের জটিলতা থাকলে ডায়াবেটিস রোগীকে ইনসুলিন গ্রহণ করতে হবে এবং জন্ডিস হলে সাময়িকভাবে ডায়াবেটিসের মুখে খাওয়ার ওষুধ বন্ধ রেখে ইনসুলিন গ্রহণ করতে হতে পারে।
# ডায়াবেটিসের আক্রান্তদের যেকোনো অস্ত্রোপচারের আগে ও পরে রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়। ঘা শুকানো এবং নানা ধরনের জটিলতা এড়াতে রক্তে শর্করার মাত্রা অনুযায়ী রোগীদের সাময়িক বা দীর্ঘমেয়াদি ইনসুলিন লাগতে পারে।
# রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বেড়ে গেলে ‘ডায়াবেটিক কিটোএসিডোসিস’ ও ‘হাইপারঅসমোলার কোমা’ নামের জটিলতা দেখা দিতে পারে। ফলে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে। এ রকম জটিলতায় রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি রেখে স্যালাইনের মাধ্যমে ইনসুলিন দিতে হয়।
# ডায়াবেটিসে আক্রান্ত কারো হার্টঅ্যাটাক, স্ট্রোক বা মারাত্মক কোনো সংক্রমণে (যেমন : যক্ষ্মা, নিউমোনিয়া, ফোড়া, গ্যাংগ্রিন বা পচনশীল ক্ষত ইত্যাদি) দ্রুত আরোগ্যের জন্য ইনসুলিন গ্রহণ জরুরি।
ইনসুলিন গ্রহণ বন্ধ করা যাবে কি?
সাধারণত টাইপ-২ ডায়াবেটিস মেলিটাসে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে ইনসুলিন গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিতে পারে। ইনসুলিন গ্রহণ অবশ্যই বিরক্তিকর। তাই অনেকেই জানতে চান-‘সারাজীবন ইনসুলিন গ্রহণ করতে হবে কিনা।’ না, সারাজীবন ইনসুলিন গ্রহণ করতে হবে না। যদি-
# রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
# মুটিয়ে যাওয়া নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
# নিয়মিত ব্যায়াম এবং খাদ্যাভ্যাসে নিয়ম-শৃঙ্খলা মেনে চলা যায়।
ওজন বৃদ্ধি ও ইনসুলিন গ্রহণ থেকে মুক্তি
ইনসুলিন এক ধরনের হরমোন, যা নিয়মিত গ্রহণে ওজন বেড়ে যেতে পারে। কেননা, ইনসুলিন ডায়াবেটিস রোগীদের খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে রক্তে গ্লুকোজ বা শর্করা শোষণের পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে কেউ শরীরের প্রয়োজনের অতিরিক্ত ক্যালোরি গ্রহণ করলে মুটিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। শরীরে অতিরিক্ত মেদ জমে। তাই খাদ্যাভাসে নিয়মতান্ত্রিক হতে পারলে, মুটিয়ে যাওয়া রোধ করতে পারলে ইনসুলিন গ্রহণ থেকে মুক্তি পাবার সম্ভাবনা বাড়ে।
ওজন কমানোর উপায়
# অতিরিক্ত ক্যালোরি-যুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। পুষ্টিকর খাবার খাবেন। শর্করা, আমিষ এবং চর্বিযুক্ত খাবার পরিমিতভাবে খেতে হবে। সাথে সবুজ-সতেজ শাক-সবজি ও ফলমূল খেলে ওজন কমানো সম্ভব।
# নিয়মিত ব্যায়াম করুন। কায়িক পরিশ্রম করুন। সাইকেল চালনা, সাঁতার কাটা, হাঁটা ওজন কমাতে সহায়তা করে।
ডায়েটিং ওজন কমাতে পারে?
অনেকের ধারণা, ডায়েটিং বা উপোস করলে ওজন কমবে- এটা ভুল ধারণা। উপোস করলে শর্করার মাত্রা কমে। ফলে উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত খাবারে আগ্রহ তৈরি হবে এবং ওজন আরও বাড়বে।
ইনসুলিন গ্রহণ পদ্ধতি মেনে চলুন
অনেক ডায়াবেটিস রোগী স্বেচ্ছায় ইনসুলিন গ্রহণ বন্ধ করে দেন। এতে জটিলতা বাড়ে। ইনসুলিন বন্ধ করলে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে শরীরে আরও অনেক জটিলতা বাড়বে আর কোনোভাবে শরীরের ইনসুলিন তৈরির কোষগুলো নষ্ট হয়ে গেলে সেগুলো সরিয়ে তোলার কোনো উপায় থাকবে না এবং ইনসুলিন গ্রহণ থেকে মুক্তিও মিলবে না।
নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন
কখনোই নিজেই নিজের ডাক্তারি করবেন না। ডায়াবেটিসে চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত ওষুধ সেবন বিপদ ডেকে আনতে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শ মতো নিয়মিত ওষুধ সেবন এবং নিয়মিত পর্যবেক্ষণে থাকা ডায়বেটিস রোগীর জটিলতা নিরসন করতে পারে।
লেখক: ডা. শাহনেওয়াজ চৌধুরী
এমবিবিএস, সিসিডি (বারডেম)। সিনিয়র মেডিকেল অফিসার, শাহজাহান জেনারেল হাসপাতাল, সুবিদখালী, মির্জাগঞ্জ, পটুয়াখালী। ফোন: ০১৭২২-০৪১৯৫৯
- লামা ফাসিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ১২ ইউপি সদস্যদের অনাস্থা
- রুমা ও বিলাইছড়ি উপজেলা সীমান্তে গোলাগুলি
- বান্দরবানে অপহৃত সেই ব্যাংক ম্যানেজারকে চট্টগ্রামে বদলি
- প্রাণী ও মৎস্যসম্পদ উন্নয়নে বেসরকারি খাত এগিয়ে আসুক
- মন্ত্রী-এমপির প্রার্থীদের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ
- চালের বস্তায় জাত, দাম উৎপাদনের তারিখ লিখতেই হবে
- ৫০ বছরে দেশের সাফল্য চোখে পড়ার মতো
- সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীতে আসছেন আরও ৪ লাখ মানুষ
- বঙ্গবন্ধু টানেলে পুলিশ-নৌবাহিনী-ফায়ার সার্ভিসের জরুরি যানবাহনের টোল মওকুফ
- বাংলাদেশে দূতাবাস খুলছে গ্রিস
- রাজস্ব ফাঁকি ঠেকাতে ক্যাশলেস পদ্ধতিতে যাচ্ছে এনবিআর
- কাতারের আমির আসছেন সোমবার
- এবার চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় জ্বালানি তেল যাবে পাইপ লাইনে
- কেএনএফ সদস্যদের আদালতে হাজির-দুই দিন করে চার দিনের রিমান্ড
- মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতির ওপর নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
- আগামী সপ্তাহে থাইল্যান্ড সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী
- মুজিবনগর দিবস : সব অপশক্তিকে প্রতিহত করার অঙ্গীকার
- পর্যটন শিল্পের বিকাশে কুয়াকাটায় বিমানবন্দর নির্মাণের উদ্যোগ
- হাওরে কৃষকের মুখে স্বর্ণালি হাসি
- সর্বজনীন পেনশন প্রসারে ৮ বিভাগে মেলা
- জলবিদ্যুতে বাংলাদেশকে বিনিয়োগের আহ্বান নেপালের
- এক সফটওয়্যারের আওতায় সব সরকারি চাকরিজীবী
- দায়িত্বশীল ও টেকসই সমুদ্র ব্যবস্থাপনার আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
- ‘মাই লকারে’ স্মার্টযাত্রা
- মাঠ প্রশাসন সামলাতে হার্ডলাইনে সরকার
- থানচি সাংগ্রাইং মৈত্রী পানি বর্ষন উৎসব
- বাইশারীতে টিসিবির পণ্য পেয়ে মহা খুশি উপকারভোগীরা
- বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে কোন সশস্ত্র সংগঠন থাকবে না - র্যাব মহাপরিচালক
- মুজিবনগর দিবসে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী
- মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
- কেএনএফ সদস্যদের আদালতে হাজির-দুই দিন করে চার দিনের রিমান্ড
- থানচি সাংগ্রাইং মৈত্রী পানি বর্ষন উৎসব
- লামায় ইটভাটায় অভিযান জরিমানা আদায়
- রুমায় যৌথ অভিযানে কেএনএফ এর ৯ সদস্য আটক অস্ত্র উদ্ধার
- বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে কোন সশস্ত্র সংগঠন থাকবে না - র্যাব মহাপরিচালক
- বেঁচে গেলেন শতাধিক যাত্রী
- কিস্তির সময় পার হলেই মেয়াদোত্তীর্ণ হবে ঋণ
- প্রার্থী হচ্ছেন বিএনপি জামায়াত নেতারাও
- অবৈধ অনলাইন পোর্টালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা
- জলবিদ্যুতে বাংলাদেশকে বিনিয়োগের আহ্বান নেপালের
- আপাতত মার্জারে যাচ্ছে ১০ ব্যাংক, এর বাইরে নয়: বাংলাদেশ ব্যাংক
- ব্যাংকের আমানত বেড়েছে ১০.৪৩ শতাংশ
- এক সফটওয়্যারের আওতায় সব সরকারি চাকরিজীবী
- নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত দিয়ে দুই মিয়ানমার সেনা বাংলাদেশের আশ্রয়ে
- বাইশারীতে টিসিবির পণ্য পেয়ে মহা খুশি উপকারভোগীরা
- বিভেদ মেটাতে মাঠে আওয়ামী লীগ নেতারা
- মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
- ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ককে লালন করে নতুন উদ্যমে এগিয়ে যেতে হবে : শ্রিংলা
- বাজার নিয়ন্ত্রণে আরও সোয়া লাখ টন চাল আমদানির অনুমতি
- রেমিট্যান্সে সুবাতাস, ১২ দিনে এলো ৮৭ কোটি ডলার