শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ৬ ১৪৩১
|| ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
দৈনিক বান্দরবান
প্রকাশিত: ২০ অক্টোবর ২০২১
আজ ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের উল্লেখযোগ্য ধর্মী উৎসব পবিত্র ঈদ-এ মিলাদুন্নবী (সাঃ),সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উল্লেখযোগ্য ধর্মী উৎসব শ্রী শ্রী লক্ষীপূজা এবং অন্যদিকে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী মারমা সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব মাহা ওয়াগ্যোই পোয়ে বা প্রবারণা পূর্ণিমা এর ধর্মীয় উৎসব এক সাথে সম্প্রীতিময় ভারে অনুষ্ঠিত হবে।
আজ ২০ অক্টোবর বুধবার ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর জন্ম ও মৃত্যু দিবস আজকের এই দিন। আজ ১২ রবিউল আওয়াল সকল ঈদের সেরা ঈদ ঈদে মিলাদুন্নবী (সাঃ) পবিত্র জশনে জুলুছে ঈদে মিলাদুন্নবী (সাঃ) সারা বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশের সকল জেলায় উদ্যাপন করা হচ্ছে, তারই ধারাবাহিকতায় বান্দরবানে আমরা ঈদে মিলাদুন্নবী (সাঃ) পবিত্র জশনে জুলুছে ঈদে মিলাদুন্নবী (সাঃ) উদ্যাপন করছি। মানবাতার মুক্তির ধুত হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এই পৃথিবীতে মানব জাতির মুক্তির জন্য ইসলাম ধর্ম প্রচার করেছেন, ইসলামের সঠিক জ্ঞান আহরন করে সঠিক ভাবে তা মেনে চলার জন্য আহ্বান জানান। এসময় বক্তারা বলেন, মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর জন্ম ও মৃত্যু দিবস আজকের এই দিনে। ৫৭০ খৃস্টাব্দের এ দিনে মক্কায় জন্ম গ্রহণ করেন তিনি আর ৬৩২ খৃস্টাব্দে একই দিনে ইহলোক ত্যাগ করেন মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)। তাই এই উৎসবকে ঘিরে বান্দরবানের বিভিন্ন মসজিদ,মাদ্রাসা ও গাউছিয়া কমিটি বাংলাদেশ বান্দরবান জেলা শাখার আয়োজনে পবিত্র জশনে জুলুছে ঈদে মিলাদুন্নবী (সাঃ) উদযাপন উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র্যালী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উল্লেখযোগ্য ধর্মী উৎসব শ্রী শ্রী লক্ষীপূজা। আজ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের লক্ষীপূজা । শাস্ত্রমতে, দেবী লক্ষী ধনসম্পদ তথা ঐশ্বর্যের প্রতীক। এ ছাড়া উন্নতি (আধ্যাত্মিক ও পার্থিব), আলো, জ্ঞান, সৌভাগ্য, উর্বরতা, দানশীলতা, সাহস ও সৌন্দর্যের দেবীও তিনি। শারদীয় দুর্গোৎসব শেষে প্রথম পূর্ণিমা তিথিতে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা এই পূজা করে থাকেন। এ পূজা কোজাগরী লক্ষীপূজা নামেও পরিচিত। কোজাগরী শব্দটি এসেছে ‘কো জাগর্তী’ থেকে। সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস কোজাগরী পূর্ণিমার দিন দেবী নিশীথ রাতে প্রতিটি মানুষের গৃহে বলে থাকেন- ‘কে আছো জেগে?’ হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, পূর্ণিমা রাতে দেবী লক্ষী ধনধান্যে ভরিয়ে দিতে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িতে পূজা গ্রহণ করতে আসেন। লক্ষী দেবী সন্তুষ্ট থাকলে সংসারে অর্থকষ্ট থাকবে না ও সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য বাড়বে। বাঙালি বিশ্বাসে লক্ষীদেবী দ্বিভুজা ও তার বাহন পেঁচা এবং হাতে থাকে শস্যের ভান্ডার। তবে বাংলার বাইরে লক্ষীর চুর্ভুজা কমলে-কামিনী মূর্তিই বেশি দেখা যায়। প্রায় প্রাতটি বাঙালি হিন্দুর ঘরে ঘরে লক্ষীপূজা করা হয়। এ উপলক্ষে হিন্দু নারীরা উপবাস ব্রত পালন করেন। আজ সারা দেশের সাথে সাথে বান্দরবানেও বিভিন্ন মন্দির ও মন্ডপের পাশাপাশি হিন্দুদের ঘরে ঘরে সকালে পূজার আনুষ্ঠানিকতা শেষে অঞ্জলি, প্রসাদ বিতরণ ও অতিথি আপ্যায়ন করা হবে। পূজা-অর্চনার পাশাপাশি ঘরবাড়ির আঙিনায় আঁকা হবে লক্ষীর পায়ের ছাপের আল্পনা। সন্ধ্যায় ঘরে ঘরে প্রদীপ প্রজ্বলন করা হবে।
অন্যদিকে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী মারমা সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব মাহা ওয়াগ্যোই পোয়ে বা প্রবারণা পূর্ণিমা। এই উপলক্ষে আষাঢ়ী পূর্ণিমার পর থেকে তিনমাস বর্ষা বাস পালন শেষে শুরু হয় মারমা সম্প্রদায়ের আকর্ষণীয় এ উৎসব ওয়াগ্যোয়াই পোয়ে বা প্রবারণা পূর্ণিমা। পার্বত্য জেলা বান্দরবানের মারমা সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব ওয়াগ্যোই পোয়ে বা প্রবারণা পূর্ণিমা।
প্রতি বছর পূর্ণিমার তিথিতে বৌদ্ধ ধর্মালম্বীরা এ উৎসবটি পালন করে থাকে। উৎসবকে ঘিরে মারমা পল্লী গুলোতে বইছে এখন আনন্দের বন্যা। আজ ২০ অক্টোবর থেকে ২ দিন ব্যাপী পার্বত্য জেলা বান্দরবানে পালিত হবে এ উৎসব।
এরমধ্যে রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্টান, রথযাত্রা, বিভিন্ন পাড়ায় ও গ্রামে পিঠা তৈরীর উৎসব, ফানুস বাতি ওড়ানো, হাজার প্রদীপ প্রজ্জলনসহ নানা আয়োজন। উৎসবের প্রধান আকর্ষণ বাঁশের তৈরী একটি রথ (পাখি সদৃশ) যুবক যুবতীরা এতিহ্যবাহী মার্মা গানের সাথে রথটি টেনে বিভিন্ন বৌদ্ধ বিহার প্রদক্ষিণ করে এসময় রথের মধ্যে মোমবাতি আগরবাতি জ্বালিয়ে উৎসবের শেষে সাঙ্গু নদীতে বিসর্জন দেয়।
এদিকে তিন ধর্মীয় উৎসব পালনে যাতে কোন ধরনের সমস্যা না হয় এবং নিরাপদে যাতে ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের উল্লেখযোগ্য ধর্মী উৎসব পবিত্র ঈদ-এ মিলাদুন্নবী (সাঃ),সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উল্লেখযোগ্য ধর্মী উৎসব শ্রী শ্রী লক্ষীপূজা ও বৌদ্ধ ধর্মালম্বীরা ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করতে পারে সেজন্য পুলিশের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে নানা পদক্ষেপ। এবিষয়ে বান্দরবান সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: শহিদুল ইসলাম জানান,পার্বত্য জেলা বান্দরবান একটি শান্তি ও সম্প্রীতি জেলা। তাই আজ প্রতিটা ধর্মের ধর্মীয় যাতে সঠিক ও শান্তি পূর্ণ ভাবে উদযাপন করা যায় সেজন্য উৎসবকে ঘিরে প্রায় সময়ই দেশী বিদেশী পর্যটকেরা বান্দরবান আসে তাই এই অনুষ্টানের সার্বিক নিরাপত্তা দিতে আমরা বিভিন্ন স্থরের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি । আশা করি সবাই নিরাপদে মিলেমিশে উৎসব উদযাপন করতে পারবে।
dainikbandarban.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়