বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ১০ ১৪৩১
|| ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
দৈনিক বান্দরবান
প্রকাশিত: ১৬ এপ্রিল ২০২৩
পাহাড় কন্যা বান্দরবানে আগত পর্যটকদের কাছে দর্শনীয় পর্যটন স্পট শৈল প্রপাত পর্যটন কেন্দ্র। শহর থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে বান্দরবান-রুমা সড়কের পাশেই ফারুকপাড়া নামক স্থানে শৈল প্রপাত অবস্থিত। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক ভাবে তৈরি পাহাড়ি শীতল পানির প্রবাহ। যা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপূর্ব সৃষ্টি। ঝর্ণার হিম শীতল পানির ঢল শীতল আনন্দ দিবে দর্শনার্থীদের।
প্রায় সারাবছরই দেশী বিদেশী পর্যটক থাকলেও বর্ষাকালে শৈল প্রপাতের প্রবাহ বাড়ার সাথে সাথে এখানে বেড়াতে আসা পর্যটকদের সংখ্যাও বাড়ে। তবে বর্ষাকালে এ ঝর্ণার দৃশ্য অপরুপ সৌন্দর্যে রূপ নেয়।
এ প্রপাতের আশপাশের পাহাড়ে বম সম্প্রদায়ের শতাধিক মানুষের বসবাস। শৈল প্রপাত পর্যটন কেন্দ্রকে উপলক্ষ করে রাস্তার ধারে ও স্পটের পাশেই গড়ে উঠেছে বেশ কিছু হস্তশিল্পের দোকান।
শৈল প্রপাতের আশেপাশে বসবাসকারী বম সম্প্রদায়ের জনসাধারণ তাদের দৈনন্দিন জীবিকার প্রয়োজনে শৈলপ্রপাত এর পাথুরে পিচ্ছিল পথ ও ঝর্ণা ডিঙ্গিয়ে আসা-যাওয়া করে। যাতায়াতের জন্য বিকল্প কোন পথ না থাকায় ঝুঁকি নিয়েই প্রতিদিন স্থানীয়রা এই পথ দিয়ে যাতায়াত করেন। এছাড়াও আগত পর্যটকদের অনেকেই ঝর্ণার সৌন্দর্য উপভোগ করার সময় ঝর্ণার পিচ্ছিল পাথুরে এলাকায় হাটতে, ঝর্ণার স্রোত সামলাতে না পেরে অসাবধানতা বশত অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়।
স্থানীয় বসবাসকারী জনসাধারণের রাস্তা পারাপার কস্ট লাঘবের পাশাপাশি পর্যটন কেন্দ্রের সৌন্দর্য বৃদ্ধির কথা মাথায় রেখে ব্যাবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর, বান্দরবান কার্যালয়। সম্পুর্ন নিজস্ব অর্থায়নে পর্যটন কেন্দ্রের সৌন্দর্যের সাথে সামঞ্জস্য রেখে নির্মাণ করা হয়েছে একটি নিরাপত্তা "ওয়েয়ার" যার নির্মাণে ব্যায় হয়েছে আনুমানিক ৫ লক্ষ টাকা। এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ জিয়াউল ইসলাম মজুমদার এর সাথে কথা বললে তিনি জানান- পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এর পরামর্শে সম্পুর্ন নিজেদের খরচে পর্যটন কেন্দ্রের সৌন্দর্য বজায় রেখে এই "ওয়েয়ার" টা নির্মাণ করা হয়েছে। দৃষ্টি নন্দিত এই "ওয়েয়ার" টি যেমন আগত পর্যটকদের দুর্ঘটনা প্রবন এলাকায় যাতায়াতের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে পাশাপাশি শৈল প্রপাত পর্যটন কেন্দ্রের আশেপাশের বসবাসকারী জনসাধারণ যাদের দৈনন্দিন প্রয়োজনে পাহাড়ের এপার থেকে ওপারে যাওয়া লাগে তারাও এর উপর দিয়ে নিরাপদে যাতায়াত করতে পারবে।
তিনি আরো জানান- "ইতিমধ্যে পর্যটন কেন্দ্রের উন্নয়নের বিষয়ে বান্দরবান জেলা প্রশাসকের পরামর্শ গ্রহণ ও বাস্তবায়নের ব্যাপারে কাজ করছে। পর্যটনের সৌন্দর্য বৃদ্ধির কথা মাথায় রেখে আগামীতে এখানে একটি ঝুলন্ত সেতু নির্মাণের কথা রয়েছে।
এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন পর্যটন কেন্দ্র এলাকায় বসবাসকারী স্থানীয় জনসাধারণ, নিজেদের সুবিধা ও পর্যটন কেন্দ্রের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পেয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন আগত পর্যটকদের অনেকেই। স্থানীয় বসবাসকারী জনসাধারণ যারা পর্যটন কেন্দ্রকে ঘিরে নিজেদের জীবিকার ব্যাবস্থা করে আসছে তারা বলেন- "এই পর্যটন কেন্দ্রটি অনেক পুরনো এবং খুবই জনপ্রিয়। প্রতি বছর হাজারো ঝর্না প্রেমি পর্যটকের সমাগম ঘটে এই শৈল প্রপাত পর্যটন কেন্দ্রে। এই পর্যটন কেন্দ্রকে ঘিরে গড়ে উঠেছে অনেক হস্তশিল্পের দোকান, অধিকাংশ দোকান অস্থায়ী। এখানে অনেকেই আছেন যারা স্থায়ী ভাবে একটা সুন্দর অবকাঠামো দোকান নির্মাণ করে ব্যাবসা পরিচালনা করতে চায় কিন্তু সে ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব হয়নি।
এখানে গড়ে উঠা দোকানের একমাত্র আয়ের উৎস এখানে বেড়াতে আশা পর্যটক। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে পর্যটন কেন্দ্রীয় এলাকা সংস্কার করে যদি স্থায়ী ভাবে কিছু দোকান বরাদ্দ দেয়া হয় তাহলে পর্যটন কেন্দ্রের সৌন্দর্য আরো বৃদ্ধি পাবে বলে অনেকেই মনে করেন।
dainikbandarban.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়