বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ৫ ১৪৩১
|| ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
দৈনিক বান্দরবান
প্রকাশিত: ১ জুন ২০২৩
সেনাবাহিনীর একের পর এক অভিযানে ঘাঁটি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছে কেএনএফ এর সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। অবশেষে আজ তাদের হেডকোয়ার্টার ও মূল প্রশিক্ষণ এলাকা খ্যাত সিলোপি পাড়া ছেড়েও পালাতে বাধ্য হলো তারা। বিনিময়ে ঝরলো অকুতোভয় এক বীর সেনানীর জীবন।
আজ বৃহস্পতিবার ১লা জুন রুমা জোন কমান্ডারের নেতৃত্বে চারটি চৌকস টহল দল দুপুর ১.৩০ এর দিকে বান্দরবান জেলার রুমা উপজেলার সিলোপি পাড়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে কোনরকম শক্ত প্রতিরোধ ছাড়া অনায়াসেই কেএনএফ এর মূল ঘাঁটি সিলোপি পাড়া দখল করে নেয়।
সেনাবাহিনী দখলকৃত এলাকায় এখন তল্লাশি কার্যক্রম পরিচালনা করছে মর্মে পাড়াবাসী সূত্রে জানা যায়। অভিযানে বিপুল পরিমানে অস্ত্র, গোলাবারুদ ও সামরিক সরঞ্জাম উদ্ধার হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে। তবে এলাকাটি দূর্গম হওয়ায় কি পরিমান অস্ত্র, গোলাবারুদ ও অন্যান্য বিস্ফোরক দ্রব্যাদি উদ্ধার করা হয়েছে তার সঠিক তথ্য এখনো জানা যায়নি।
এদিকে, এই অপারেশনে যাওয়ার পথে সকাল আনুমানিক ৯:২০ এর দিকে ক্যাপ্টেন শাহরিয়ার সজীব এর নেতৃত্বে একটি টহল দল থিনদলতে ত্লাং হতে সিলোপি পাড়া গমনকালে সিলোপি পাড়ার প্রবেশমুখে কেএনএফ এর পুঁতে রাখা আইইডি বিস্ফোরনে ০২ জন সেনা সদস্য আহত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে খবর পাওয়া গিয়েছিল।
আহত সেনা সদস্যরা হলেন সৈনিক তোজাম হোসনে (৩০), ওয়ারেন্ট অফিসার মোঃ আমিনুল ইসলাম (৪২)। আহত সেনা সদস্যদের উদ্ধার করতঃ আনুমানিক ১১টার সময় সিলোপি পাড়া হতে হেলিকপ্টার যোগে চট্টগ্রাম সামরিক হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। পরবর্তীতে, চিকিৎসাধীন অবস্থায় সৈনিক তোজাম হোসন (৩০) শাহাদাত বরন করেন।
উল্লেখ্য, গত ২৭শে মে শনিবার সেনাবাহিনীর একটি চৌকস দল অভিযান পরিচালনা করে রুমা উপজেলার থিংদলতে পাড়ায় গড়ে তোলা কেএনএফ এর একটি শক্ত ঘাটি দখল করে নেয়। উক্ত অভিযানে বিপুল পরিমান অস্ত্র গোলাবারুদ ও সামরিক সরঞ্জামাদি উদ্ধার হয়। মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে গত ২৯শে মে রুমার থিনদলতে ত্লাং নামক স্থানে কেএনএফ এর আরেকটি শক্ত ঘাটি দখল করে নেয় সেনাবাহিনী এবং উদ্ধার করে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ। সেনা উপস্থিতি বুঝতে পেরে কেএনএফ সদস্যরা উক্ত ঘাটিসমূহ ছেড়ে পালিয়ে যায়। সেনাবাহিনী এলাকাগুলি দখলে নিয়ে সাধারণ মানুষের জন্য নিরাপদ করতে কেএনএফ এর পুতে রাখা আইআইডি নিস্ক্রিয় করতে কাজ শুরু করে।
সেনাবাহিনীর একের পর এক সাফল্য পাহাড়ে বসবাসকারী জনসাধারণের মনোবল অনেকখানি বাড়িয়ে দিয়েছে। তাদের সাফল্যে খুশি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ মানুষেরা। সৃষ্টিকর্তার কাছে তাদের জন্য দোয়াও করছেন স্থানীয়রা।
সন্ত্রাস দমনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সর্বদাই বদ্ধপরিকর। কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মি (কেএনএফ) এর সন্ত্রাসী কার্যক্রম সম্পুর্ন রূপে বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে সেনাসুত্র জানায়। সেনাবাহিনী সূত্রে আরও জানা যায় - "অচিরেই কেএনএফ কে তাদের সকল ঘাঁটি থেকে সমূলে উৎপাটন করা হবে"।
এদিকে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এর সুত্রে জানানো হয়- "সাধারণ জনগণের নিরাপত্তার স্বার্থে সেনাবাহিনীর বিশেষায়িত দল কর্তৃক দখলকৃত এলাকায় সম্ভাব্য আইইডি সনাক্ত ও নিষ্ক্রিয়করণ প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। দেশমাতৃকার জন্য আত্মোৎসর্গকারী শহীদ সেনাসদস্যের অনাকাঙ্খিত মৃত্যুতে সেনাবাহিনী প্রধান গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং মৃত ও আহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন।
dainikbandarban.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়