শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||
চৈত্র ১৪ ১৪৩০
|| ১৮ রমজান ১৪৪৫
দৈনিক বান্দরবান
প্রকাশিত: ৩ জুন ২০২৩
গ্রীষ্মের কাট ফাটা রোদে পাহাড়ি এলাকায় পিপাসায় ক্লান্ত পথিকের জন্য পথের ধারে পানি খুজে পাওয়াটা যেনো সোনার হরিণ পাওয়ার চেয়েও কম না।
পাহাড়িদের ‘চেহ্ রাই ঘর’ নিয়ে কথা হয়েছিল স্থানীয় পাড়াবাসির সাথে। জানা যায়, এটি মারমা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্য। মারমা ভাষায় বলা হয় ‘চেরাই ঘর’ অর্থাৎ বিশ্রাম নিবাস। এটি বহুকাল থেকে প্রচলিত। জানা গেছে, এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাওয়ার পথে গাছের ছায়াতলে এ ঘরের দেখা মিলে। পাহাড়ি জনপদে যখন যানবাহনের চলাচল ছিলো না, পায়ে হাটা ছাড়া কোন উপায় ছিল না তখন মানুষ প্রয়োজনে এক জায়গা থেকে দূরে অন্য জায়গায় পায়ে হেটে যেতো। ক্লান্ত-শ্রান্ত পথিকের একটু বিশ্রাম কিংবা পানি পানে তৃঞ্চা মিটিয়ে বিশ্রাম নিতে তখন এই চেরাই ঘর গুলোই ছিলো অবলম্বন।
ছোট্ট একটি ঘরের হাল্কা উঁচুতে রাখা থাকে ঠাণ্ডা পানি ভর্তি তিন-চারটি মাটির কলসি। যে কেউ এই তপ্ত রোদে পানির তৃষ্ণা মেটাতে পারে। পিপাসার্ত পথিক কিংবা পাহাড়ি শ্রমিকের বিশ্রাম নিবাসও বলা হয় এটিকে।
বান্দরবান সদর উপজেলার অন্তর্গত শহর থেকে ৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ক্যামলং পাড়া। বান্দরবান-রাঙামাটি সড়কের পাশে দুটি বড় অশ্বত্থ গাছের নিচেও দেখা মিলবে ‘চেহ্ রাই ঘর’। পাশাপশি জয় মোহন পাড়া, জামছড়ি ইউনিয়নের জামছড়ি মূখ পাড়া, কুহালং ইউনিয়নের থোয়াইঙ্গ্যা পাড়া, ক্যামলং পাড়াসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলে এখনো এই মানবতার ঘর দৃশ্যমান। বিশেষ করে ফাল্গুন-চৈত্র মাসে কিংবা বর্ষাকালে পথচারীদের অনেক উপকারে আসে এই ঘর গুলো। শত শত মানুষের তৃঞ্চা মেটানোর পাশাপাশি প্রাকৃতিক কারনে ঝড়বৃষ্টির সময় এই ঘরে খানিকটা নিরাপদ বোধ করে ক্লান্ত পথিক। আধুনিকতার সময়েও পাহাড়ের এই চেরাই ঘর মানবতার এক অনন্য নিদর্শন যা বহুকাল থেকেই চলে আসছে।
dainikbandarban.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়