শুক্রবার ১১ অক্টোবর ২০২৪ ||
আশ্বিন ২৫ ১৪৩১
|| ০৬ রবিউস সানি ১৪৪৬
দৈনিক বান্দরবান
প্রকাশিত: ২৮ মে ২০২৪
আগামী ২০২৬ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বাবিউবোর) আওতায় সব গ্রাহককে প্রিপেইড মিটারের আওতায় আনা হচ্ছে। এ জন্য জরুরি ভিত্তিতে কেনা হচ্ছে এই মিটার।
গতকাল সোমবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে প্রস্তাবটি অনুমোদন করা হয়েছে। এই বৈঠকে আরো দুইটি প্রস্তাবও অনুমোদন কার হয়। এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত দু’টি বস্ত্রমিল সরকারি-বেসরকারি আওতায় চালু করার প্রস্তাব। এ লক্ষ্য বেসরকারি অংশীদার নির্বাচনে চুক্তি করার নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সংস্কার ও সমন্বয় সচিব মো: মাহমুদুল হোসাইন খান সাংবাদিকদের জানান, বিদ্যুৎ বিভাগ কর্তৃক ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের মধ্যে বাবিউবোর সব গ্রাহককে প্রিপেইড মিটারের আওতায় আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। নির্ধারিত সময়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য জরুরি ভিত্তিতে সরকারি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পাওয়ার ইকুইপমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারিং কোলি. থেকে ডিজাইন, সাপ্লাই, ইন্সস্টলেশন, টেস্টিং অ্যান্ড কমিশনিং অব স্মার্ট প্রিপ্রেমেন্ট মিটারস উইথ পিএলসি মডিউল অ্যান্ড থ্রি ইয়ার্স অপারেশনাল সাপোর্ট সার্ভিস ক্রয় কার্যটি সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ক্রয়ের নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে কমিটি।
বর্ণিত ক্রয়কার্যের আওতায় ৪০ হাজারটি সিঙ্গেল ফেজ মিটার, ৩২৫টি ডাটা কানেক্টর ইউনিট ক্রয় ও স্থাপন, বিদ্যমান পোস্টপেইড মিটার প্রতিস্থাপন এবং তিন বছরের অপারেশনাল সাপোর্ট সার্ভিস নেয়া হবে। এ পর্যন্ত বাবিউবোর ৫৭.৯৬ শতাংশ গ্রাহককে প্রিপেইড মিটারের আওতায় আনা হয়েছে। তিনি আরো জানান, রাষ্ট্রায়ত্ত দু’টি বস্ত্রকল পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) আওতায় চালুর নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড (বিটিএমসি) নিয়ন্ত্রণাধীন বস্ত্রকল দু’টি হচ্ছে- চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডের আর আর টেক্সটাইল মিলস ও রাজশাহী টেক্সটাইল মিলস।
জানা যায়, ১৯.৪৮ একর জমির ওপর আর আর টেক্সটাইল মিলটি ১৯৬৩ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয়। মিলটি ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত উৎপাদন চলমান ছিল। বর্তমানে বন্ধ মিলটি পিপিপি ভিত্তিতে পুনঃচালু করার প্রস্তাব ২০১৭ সালের ২০ ডিসেম্বর তারিখের সিসিইএ সভায় নীতিগত অনুমোদিত হয়। পরে বেসরকারি অংশীদার নির্বাচনের জন্য আন্তর্জাতিক টেন্ডার আহ্বান করা হলে তিনটি প্রতিষ্ঠান প্রস্তাব দাখিল করে যা কারিগরিভাবে রেসপনসিভ হয়। টিইসি কর্তৃক নেগোসিয়েশনের মাধ্যমে সুপারিশকৃত সর্বোচ্চ স্কোর অর্জনকারী প্রতিষ্ঠান প্রাণ কনসোর্টিয়ামের সাথে ৩০ বছর মেয়াদে সম্পাদিতব্য চুক্তি স্বাক্ষরের অনুমোদন দিয়ে কমিটি। বেসরকারি অংশীদার মিলটির ভূমি ব্যবহার বাবদ আপফ্রন্ট প্রিমিয়াম হিসেবে এককালীন ১০ কোটি টাকা এবং তিন বছর গ্রেস পিরিয়ড শেষে পরবর্তী বছর থেকে ৩ কোটি ২২ লাখ টাকা বিটিএমসিকে প্রদান করবে। চুক্তির মেয়াদ হবে ৩০ বছর, যা মেয়াদান্তে নবায়নযোগ্য। অন্য দিকে রাজশাহীতে ২৬.৩৪ একর জমির ওপর ১৯৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত রাজশাহী টেক্সটাইল মিলটি ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত উৎপাদন চলমান ছিল। বন্ধকৃত মিলটি পিপিপি ভিত্তিতে পুনঃচালুকরণের প্রস্তাব ২০/১২/২০১৭ সালের ২০ ডিসেম্বর তারিখের সিসিইএ সভায় নীতিগত অনুমোদিত হয়। পরে বেসরকারি অংশীদার নির্বাচনের জন্য আন্তর্জাতিক টেন্ডার আহ্বান করা হলে একটি প্রতিষ্ঠান প্রস্তাব দাখিল করে, যা কারিগরিভাবে রেসপনসিভ হয়। টিইসি কর্তৃক নেগোসিয়েশনের মাধ্যমে সুপারিশকৃত একমাত্র দরদাতা প্রতিষ্ঠান চড়কা টেক্সটাইল মিলস লিমিটেডের সাথে ৩০ বছর মেয়াদে চুক্তির অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। বেসরকারি অংশীদার মিলটির ভূমি ব্যবহার বাবদ আপফ্রন্ট প্রিমিয়াম হিসেবে এককালীন ছয় কোটি টাকা এবং তিন বছর গ্রেস পিরিয়ড শেষে পরবর্তী বছর থেকে ১ কোটি ৭১ লাখ ৫০ হাজার টাকা বিটিএমসিকে প্রদান করবে।
সচিব বলেন সভায়, হবিগঞ্জের বিবিয়ানা দক্ষিণ ৪০০ মে.ও. কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্রের ‘সাপ্লাই অব স্পেয়ার্স, কনজিউঅ্যাবলস অ্যান্ড শিডিউল মেইনটেন্যান্স ওয়ার্কস ফর ৬ ইয়ার্স’ কার্যটি সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ক্রয়ের নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ০৪/০২/২০২১ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি তারিখ বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করে ৩০/১২/২০২৩ সালের ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩০ হাজার ৬৯৫ ঘণ্টা রানিং আওয়ার অতিক্রম করে। ২০২৩ সালের ২৭ জানুয়ারি তারিখ ইপিসি ঠিকাদারের ওয়ারেন্টি পিরিয়ড শেষ হয়। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য শিডিউল মেইটেন্যান্স করা প্রয়োজন। বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিভিন্ন মালামালের মূল প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান সিমেন্স, জার্মানি। তাই রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে ও জনস্বার্থে বিবিয়ানা দক্ষিণ ৪০০ মে.ও. কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ সরসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ক্রয়ের প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এতে ব্যয় হতে পারে ৬৪৯ কোটি ৭৯ লাখ ৯৬ হাজার ৭৪ টাকা।
dainikbandarban.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়