মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ১০ ১৪৩১
|| ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
দৈনিক বান্দরবান
প্রকাশিত: ২২ জানুয়ারি ২০২২
সম্প্রতি অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ ১১২টি আন্তর্জাতিক সংগঠন জাতিসংঘের শান্তি মিশনে র্যাবকে নিষিদ্ধ করার দাবি করেছে। এ নিয়ে তারা জাতিসংঘের কাছে একটি চিঠি দিয়েছে। শুধু চিঠি দিয়েই ক্ষান্ত হননি, তারা এই চিঠির বিবরণী তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে। এটি থেকে স্পষ্ট হয়েছে যে, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিসেবে পরিচিতি সংগঠনগুলো তাদের ম্যান্ডেট লঙ্ঘন করেছে। একটি দেশের বিরুদ্ধে তারা সুস্পষ্টভাবে অবস্থান গ্রহণ করেছেন। কারণ, যদি বাংলাদেশের এলিট ফোর্স র্যাবের বিরুদ্ধে সত্যি সত্যি কোন মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ ওঠে তাহলে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ কিংবা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এর মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রথম দায়িত্ব ছিলো বাংলাদেশ সরকারকে এ সম্বন্ধে অবহিত করা, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে জানানো এবং এ ব্যাপারে যদি বাংলাদেশ সরকার বা জাতীয় মানবাধিকার কমিশন কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করতো, সেক্ষেত্রে তারা ব্যবস্থা গ্রহণ করতো। কিন্তু এই প্রতিষ্ঠানগুলো একটি সুনির্দিষ্ট স্বার্থ হাসিলের জন্যই এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে বলে বিভিন্ন মহল মনে করছে।
শুধু তাই নয় অনুসন্ধানে দেখা গেছে, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এর মত মানবাধিকার সংগঠনগুলো ইউরোপিয়ান ইউনিয়নকেও এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করেছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছেও একই আবেদন দিয়েছে। তারা বলছে যে, জাতিসংঘকে যেন ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য চাপ প্রয়োগ করে যেন বাংলাদেশের কোন সদস্য শান্তি মিশনে না থাকে। এর থেকে বোঝা যাচ্ছে যে, একটি রাজনৈতিক অভিপ্রায় বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এই মানবাধিকার সংগঠনগুলো কাজ করছে। সাধারণত মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয় কোন ব্যক্তির দ্বারা, কোন প্রতিষ্ঠান দ্বারা না। র্যাবের যদি কোনো কর্মকর্তা মানবাধিকার লঙ্ঘন করেন তার দায়-দায়িত্ব র্যাব হিসেবে পুরো প্রতিষ্ঠান বর্তায় না। কিংবা একটি বিশেষ ব্যক্তির অপরাধের কারণে পুরো একটি বাহিনীর ওপর কলঙ্ক লেপন কখনোই একটি ন্যায়বিচার নয়। আর এই কাজটি করেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এর মতো প্রতিষ্ঠানগুলো।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, এই প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিপুল পরিমাণ অনুদান দিচ্ছে তারেক জিয়া এবং জামায়াত। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সময় থেকেই বাংলাদেশবিরোধী অবস্থান গ্রহণ করে। সেইসময় যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হিউম্যান রাইটস ওয়াচকে ব্যবহার করে তাদের পক্ষে লবিং করার জন্য। সেই ধারায় সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী, মীর কাসেমের মধ্যে স্বীকৃত ধনাঢ্য যুদ্ধাপরাধীরা মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার দিয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচকে। এটি পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং এই অর্থ দেয়ার কারণেই হিউম্যান রাইটস ওয়াচ সেই সময় যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করেছিল। শুধুমাত্র হিউম্যান রাইটস ওয়াচকে নয়, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালকেও তারেক এবং জামায়াতের ধনাঢ্যরা অর্থায়ন করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই সমস্ত অর্থায়নের কারণেই তারা বাংলাদেশের ব্যাপারে নেতিবাচক বিভিন্ন প্রতিবেদন রিপোর্ট প্রকাশ করছে।
একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, সমস্ত প্রতিবেদন এবং রিপোর্টগুলোকে তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে। এই রিপোর্ট গুলো কিভাবে তৈরি হবে এবং কিভাবে প্রকাশ করা হবে সে ব্যাপারে অর্থের লেনদেন হচ্ছে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল দীর্ঘদিন ধরেই বিশ্বে মানবাধিকার নিয়ে কাজ করছে। কিন্তু বিভিন্ন দেশে এই প্রতিষ্ঠানে সংগঠনের ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক হয়েছে এবং এ কারণে তাদেরকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। গতবছর ভারত অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের কার্যক্রমকে বন্ধ ঘোষণা করেছিল এবং ভারত সরকার তদন্ত করে পেয়েছিল যে, কিছু কিছু ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের দ্বারা আর্থিকভাবে লাভবান হয়ে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ভারতের মানবাধিকার পরিস্থিতি সম্পর্কে নেতিবাচক মন্তব্য করেছে। একইরকম অভিযোগ করেছে রাশিয়া। চীন তো অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালকে কোন স্বীকৃতিই দেয় না। এরকম যখন অবস্থা তখন সুস্পষ্ট যে, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যবহার করা হচ্ছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে, বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতির এত খারাপ হয়নি যে একটি বাহিনীর সম্বন্ধে ঢালাওভাবে নেতিবাচক মন্তব্য করতে হবে, এর পিছনে রয়েছে সুগভীর রাজনৈতিক উদ্দেশ্য।
dainikbandarban.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়