শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ৬ ১৪৩১
|| ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
দৈনিক বান্দরবান
প্রকাশিত: ২ অক্টোবর ২০২১
প্রকৃতির কূলে শরতের আগমন। শুভ্র কাশফুলে ছেয়ে আছে বিশাল মাঠ। আকাশে সাদা মেঘের আনাগোনা। কী অপরূপ সুন্দর্য। ঝিরিঝিরি বাতাসে দোল খায় কাশফুলের সাদা পালক।
মনে হয় স্রষ্টা সাদা চাদর বিছিয়ে দিয়েছেন জমিনের ওপর। প্রকৃতির সঙ্গে মিশে আছে পৃথিবীর অপার সৌন্দর্য। একেক সময় তার একেক রূপ লাবণ্য প্রকাশ করে। মহান আল্লাহ এ পৃথিবীকে এত সুন্দর করে কেন সাজিয়েছেন। এর উত্তর হলো-‘আল্লাহ জামিল ইউহিব্বুল জামাল’।
আল্লাহ সুন্দর তাই তিনি সৌন্দর্যকে পছন্দ করেন। এ সুন্দরের মাঝে রয়েছে সত্য অন্বেষণকারীদের জন্য নিদর্শন। যারা চিন্তা গবেষণা করবে তারা খোদার পরিচয় লাভ করবে।
আল্লাহ পবিত্র কুরআনে বলেন, আর ভূমিতে রয়েছে বিভিন্ন নিদর্শন মুমিনদের জন্য, আর তোমাদের নিজেদেরও মধ্যে, তো তোমরা কি অবলোকন করবে না? (সূরা যারিয়াত-২০২১)।
মহান আল্লাহ পৃথিবীর মানুষকে বিভিন্ন জাতিতে বিভক্ত করেছেন। তাদের চাহিদা, দর্শন এবং রুচিবোধে তারতম্য করে দিয়েছেন। কোনো দেশে বিশাল সমুদ্র। বিস্তৃত জল রাশি। দু’চোখের দৃষ্টি যতদূর যায় পানি আর পানি। বিভিন্ন প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ দিয়েছেন মানুষের আহারের জন্য।
আবার কোনো কোনো দেশে বিশাল মরুভূমি। যেখানে এক ফোঁটা পানি পাওয়া কষ্টকর। মরুভূমিতে চলার উপযোগী করে সৃষ্টি করেছেন উট। এর মধ্যেও রয়েছে মহান আল্লাহর নিদর্শন। আবার কোথাও সৃষ্টি করেছেন বড় বড় পাহাড় আর কিছু জায়গা করেছেন সমতল ভূমি।
এসব কিছু মহান আল্লাহর অস্তিত্ব প্রমাণ করে। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে ‘তারা কি উষ্ট্রের প্রতি লক্ষ করে না যে, কীভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে এবং আকাশের প্রতি লক্ষ করে না যে, তা কীভাবে উঁচু করা হয়েছে এবং পাহাড়ের দিকে যে, তা কীভাবে স্থাপন করা হয়েছে? এবং পৃথিবীর দিকে যে, তা কীভাবে সমতল বিছানো হয়েছে’? (সূরা গাশিয়াহ-১৭-২০)।
আল্লাহ মানুষকে সৃষ্টি করেছেন তার নিপুণ হাতে। সবার শরীরে অঙ্গ-প্রতঙ্গ এক থাকলেও চেহারায় রয়েছে ভিন্নতা। এক একজনের চেহারা এক এক রকম। আল্লাহ ছাড়া এমন সৃষ্টির ক্ষমতা কার রয়েছে? তাই স্রষ্টার পরিচয় পেতে হলে তার সৃষ্টিকে নিয়ে গবেষণা করতে হবে। পৃথিবীতে তিনি সৃষ্টি করেছেন সারিসারি বৃক্ষরাজি। সৃষ্টি করেছেন বিভিন্ন গ্রহ-উপগ্রহ। করেছেন রাত দিনের পার্থক্য।
দিনের ঝলমলে আলো দূর হয়ে রাতের আঁধার নেমে আসে। মানুষ সারা দিনের পরিশ্রম দূর করতে নিদ্রায় চলে যায়। আবার সূর্যের আলোয়ই গোটা পৃথিবী আলোকিত হয়।
মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন, নিঃসন্দেহে আকাশমণ্ডলি ও পৃথিবীর সৃষ্টিতে এবং রাত ও দিনের বিবর্তনে কতিপয় নিদর্শন রয়েছে বুদ্ধির অধিকারীদের জন্য (সূরা আল ইমরান-১৯০)।
বিশ্বজগতে প্রতিটি সৃষ্টি আল্লাহর অস্তিত্ব ও তার একত্ব প্রমাণ করে। মানুষ যদি আন্তরিকভাবে পরম সত্যের সন্ধান পেতে চায় সে যেন সৃষ্টি জগতকে নিয়ে চিন্তা ও গবেষণা করে। তাহলেই সে তার স্রষ্টার পরিচয় পেয়ে যাবে।
লেখক : পরিচালক, কিশোর কথা আইডিয়াল মাদ্রাসা।
dainikbandarban.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়