বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ৫ ১৪৩১
|| ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
দৈনিক বান্দরবান
প্রকাশিত: ১৪ আগস্ট ২০২২
স্বাধীন হলেও একটি জাতি যেন মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে সেজন্য যা যা করা দরকার সবই করছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসররা। তা সত্ত্বেও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের পুনর্গঠনে গভীর মনোযোগ দিয়েছিলেন। বাংলাদেশকে দ্রুত মাথা উঁচু করে দাঁড় করাতে তিনি চেয়েছিলেন। ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি দেশে ফিরে বঙ্গবন্ধু স্বাধীন বাংলাদেশ গঠনের এক বিরাট চ্যালেঞ্জে ঝাঁপিয়ে পড়েন। নানা ষড়যন্ত্র ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মধ্যেও সফলভাবে তিনি দেশ পুনর্গঠনে কাজ করে যাচ্ছিলেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যাকাণ্ডের শিকার না হলে তার হাত ধরেই বাংলাদেশ বিশ্বের দরবারে অনেক আগেই গুরুত্বপূর্ণ জায়গা করে নিতে পারত।
আজ শোকাবহ আগস্ট মাসের নবম দিন আজ। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হলেও তার মৃত্যু নেই। তিনি চিরঞ্জীব। কেননা বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা ও স্থপতি তিনিই। যতদিন এ রাষ্ট্র থাকবে, ততদিন অমর তিনি। কবি রফিক আজাদ তার ‘এই সিঁড়ি’ কবিতায় লিখেছেন-‘এই সিঁড়ি নেমে গেছে বঙ্গোপসাগরে, সিঁড়ি ভেঙে রক্ত নেমে গেছে-ত্রিশ নম্বর থেকে/সবুজ শস্যের মাঠ বেয়ে/অমল রক্তের ধারা বয়ে গেছে বঙ্গোপসাগরে।’ এ কবিতায় রফিক আজাদ আরও লিখেছেন, ‘তার রক্তে এই মাটি উর্বর হয়েছে/সবচেয়ে রূপবান দীর্ঘাঙ্গ পুরুষ/তার ছায়া দীর্ঘ হতে হতে/মানচিত্র ঢেকে দ্যায় সস্নেহে আদরে/তাঁর রক্তে প্রিয় মাটি উর্বর হয়েছে- তাঁর রক্তে সবকিছু সবুজ হয়েছে।’
একটি স্বাধীন-সার্বভৌম জাতিরাষ্ট্র হিসাবে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধু যে অবদান রেখে গেছেন তা অবিস্মরণীয়। স্বাধীন বাংলাদেশ পুনর্গঠনে বঙ্গবন্ধু যে সংগ্রাম করেছিলেন, যে ত্যাগ ও কষ্ট স্বীকার করেছিলেন তা বাংলাদেশের মানুষ চিরদিন স্মরণ করবে। পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি দেশে ফিরে বঙ্গবন্ধু রেসকোর্সের জনসভায় মাইকের সামনে দাঁড়িয়ে শিশুর মতো কান্নায় ভেঙে পড়েন। দুই চোখে গড়িয়ে পড়ে অশ্রু। সে অবস্থায় বক্তৃতায় তিনি যুদ্ধবিধ্বস্ত স্বাধীন বাংলাদেশ পুনর্গঠনে সবার সাহায্য-সহযোগিতা চেয়েছিলেন। ওইদিন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘আমি আশা করি, দুনিয়ার সব রাষ্ট্রের কাছে আমার আবেদন আমার রাস্তা নাই, ঘাট নাই, আমার জনগণের খাবার নাই, আমার মানুষ গৃহহারা, সর্বহারা, আমার মানুষ পথের ভিখারি, তোমরা আমার মানুষকে সাহায্য কর। মানবতার খাতিরে আমি তোমাদের কাছে সাহায্য চাই।’ দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশকে সোনার বাংলা হিসাবে গড়ে তোলার স্বপ্ন ছিল তার।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর এ দেশে খন্দকার মোশতাকের নেতৃত্বে সামরিক জান্তারা স্বৈরশাসন শুরু করেন। তাকে সপরিবারে হত্যা করার পর জেলখানায় জাতীয় চার নেতাকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।
dainikbandarban.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়