বঙ্গবন্ধু ও ধর্মনিরপেক্ষতা
দৈনিক বান্দরবান
প্রকাশিত: ১ জুলাই ২০২১
শেখ মুজিবুর রহমান রচিত 'অসমাপ্ত আত্মজীবনী' পাঠ করে আমরা অবগত হয়েছি, মুসলিম পরিবারের সন্তান হিসেবে বঙ্গবন্ধুর প্রিয় ধর্ম ছিল ইসলাম। কিন্তু অন্য সব ধর্মের প্রতিও তাঁর শ্রদ্ধা ছিল। এ কারণেই একজন যথার্থ বাঙালি ও একজন মুসলমান হওয়ার পথে কোনো দিন তিনি কোনো বিরোধের সম্মুখীন হননি।
১৯৭০ সালের নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর আওয়ামী লীগের ঘোষণাপত্রে শাসনতন্ত্রের মৌলিক বৈশিষ্ট্য অংশে ইসলাম ও সংখ্যালঘু সম্পর্কে বলা হয় : ক) জনসংখ্যার বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশের প্রিয় ধর্ম হলো ইসলাম। আওয়ামী লীগ এই মর্মে সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, শাসনতন্ত্রে সুস্পষ্ট গ্যারান্টি থাকবে যে পবিত্র কোরআন ও সুন্নায় সন্নিবেশিত ইসলামের নির্দেশাবলির পরিপন্থী কোনো আইন পাকিস্তানে প্রণয়ন বা বলবৎ করা চলবে না। শাসনতন্ত্রে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর পবিত্রতা রক্ষার গ্যারান্টি সন্নিবেশিত হবে। সর্বস্তরে ধর্মীয় শিক্ষা সম্প্রসারণের জন্য পর্যাপ্ত বিধিব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। খ) সংখ্যালঘুরা আইনের দৃষ্টিতে সম্পূর্ণ সমান অধিকার ভোগ করবে। নিজেদের ধর্ম পালন ও প্রচার, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান স্থাপন ও পরিচালনা এবং নিজ নিজ ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় শিক্ষাদানের ব্যাপারে সংখ্যালঘুদের অধিকার শাসনতান্ত্রিকভাবে রক্ষা করা হবে। স্বীয় ধর্ম ছাড়া অন্য যেকোনো ধর্ম প্রচারের জন্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কোনো ব্যক্তিকে কর দিতে বাধ্য করা হবে না। নিজ ধর্মের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট না হলে কোনো ব্যক্তিকে ধর্ম সম্পর্কীয় কোনো নির্দেশ গ্রহণ অথবা কোনো ধর্মীয় উপাসনা বা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার ব্যাপারে জোর করা হবে না। ধর্মীয় সহিষ্ণুতার এই আদর্শ বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগের অন্যতম মৌল স্তম্ভ।
বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল শোষণহীন রাষ্ট্র ও সমাজ গড়ে তোলা। ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি ভাষণে তিনি বলেন, 'বাংলাদেশ একটি আদর্শ রাষ্ট্র হবে। আর তার ভিত্তি কোনো ধর্মীয়ভিত্তিক হবে না। রাষ্ট্রের ভিত্তি হবে গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা (পরবর্তীকালে সংযোজিত হয়েছিল জাতীয়তাবাদ)।' ধর্মনিরপেক্ষতার ভিত্তি ছিল অনিবার্য। ভারতবর্ষের দাঙ্গার অভিজ্ঞতা বঙ্গবন্ধুর ছিল। ধর্মের নামে হানাহানির ঘটনা দেখেছেন তিনি। পাকিস্তানি শাসনামলে ধর্মকে সামনে রেখেই পাকিস্তানিরা বাঙালিকে শাসন ও শোষণ করেছে। এ জন্য সব ধর্মকে শ্রদ্ধা করলেও বঙ্গবন্ধু ধর্মান্ধতাকে ঘৃণা করতেন। ধর্মকে মেনে নিয়ে উদারনৈতিক চিন্তাধারায় অভ্যস্ত হয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। সব ধর্মের সহাবস্থান এবং বদ্ধ চিন্তার মুক্তিতেই ধর্মনিরপেক্ষতা পূর্ণতা পায়।
১৯৭২ সালের ১২ অক্টোবর খসড়া সংবিধান প্রসঙ্গে জাতীয় সংসদে বঙ্গবন্ধু যে ভাষণ দেন তাতে ছিল : 'আর হবে ধর্মনিরপেক্ষতা। ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা নয়। হিন্দু তার ধর্ম পালন করবে; মুসলমান তার ধর্ম পালন করবে; খ্রিস্টান, বৌদ্ধ- যে যার ধর্ম পালন করবে। কেউ কারো ধর্মে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না, বাংলার মানুষ ধর্মের ব্যাপারে হস্তক্ষেপ চায় না। রাজনৈতিক কারণে ধর্মকে ব্যবহার করা যাবে না। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য ধর্মকে বাংলার বুকে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না। যদি কেউ ব্যবহার করে, তাহলে বাংলার মানুষ যে তাকে প্রত্যাঘাত করবে, এ আমি বিশ্বাস করি।' ১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর আবার তিনি বলেন : 'জনাব স্পিকার সাহেব, ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা নয়। বাংলার সাড়ে সাত কোটি মানুষের ধর্মকর্ম করার অধিকার থাকবে। আমরা আইন করে ধর্মকে বন্ধ করতে চাই না এবং করবও না।... ২৫ বৎসর আমরা দেখেছি, ধর্মের নামে জুয়াচুরি, ধর্মের নামে শোষণ, ধর্মের নামে বেইমানি, ধর্মের নামে খুন, ধর্মের নামে ব্যভিচার- এই বাংলাদেশের মাটিতে চলেছে। ধর্ম অতি পবিত্র জিনিস। পবিত্র ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা চলবে না। যদি কেউ বলে যে, ধর্মীয় অধিকার খর্ব করা হয়েছে, আমি বলব, ধর্মীয় অধিকার খর্ব করা হয়নি। সাড়ে সাত কোটি মানুষের ধর্মীয় অধিকার রক্ষা করার ব্যবস্থা করেছি।' (বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, পৃ. ৪৬)
ঢাকার আলিয়া মাদ্রাসার এক অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, 'আমাদের দেশে পাকিস্তান আমলে ইসলামবিরোধী বহু কাজ হয়েছে। রেসের নামে জুয়াখেলা রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃত ছিল, আপনারা আলেম সমাজ কোনো দিন এর প্রতিবাদ করেননি। ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের সাহায্যে প্রকাশ্যে জুয়াখেলা চলত, এগুলো বন্ধ করার কোনো আন্দোলন আপনারা করেননি; কিন্তু ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম করবার কথা বারবার বলেছেন। ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থাপনায় জুয়া ও মদকে যে হারাম ঘোষণা করতে হয়, সেটা আপনারা জানতেন; কিন্তু আপনারা এগুলোর বিরুদ্ধে কিছু বলেননি। আমি ক্ষমতায় এসে প্রথমেই ঘোড়দৌড় বন্ধ করে দিয়েছি, পুলিশকে তৎপর হতে বলেছি শহরের আনাচে-কানাচে থেকে জুয়াড়িদের আড্ডা ভেঙে দিতে। আমি ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলি, কিন্তু ধর্মনিরপেক্ষতা ধর্ম বিরোধিতা নয়। আমি মুসলমান, আমি ইসলামকে ভালোবাসি। আপনারা আমাকে সাহায্য করুন, দেখবেন, এ দেশে ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ড কখনোই হবে না।' বাংলাদেশ টেলিভিশনে অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন শরিফের আওয়াজ শুনতে চেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু, মুসলমানরা খুশি হলে মিলাদ পড়ানোর পরামর্শ দেন তিনি। আর মাদ্রাসা শিক্ষার বরাদ্দ কখনো বাতিল করেননি তিনি।
মূলত বঙ্গবন্ধু হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি হিসেবে, জাতির জনক হিসেবে ইসলামের সঙ্গে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় বিধানে অন্য সব ধর্মের সহাবস্থান নিশ্চিত করেছিলেন। প্রথাবদ্ধ, ধর্মশাসিত সংস্কারাচ্ছন্ন জীবন তিনি পছন্দ করেননি। অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র গড়ার জন্য ধর্মের গণ্ডি ভেঙে প্রগতির পথে অগ্রসর হওয়ার পক্ষে ছিল তাঁর নীতি-আদর্শ। বাঙালি সংস্কৃতির চিরায়ত রূপটিকে ধরতে চেয়েছেন তিনি তাঁর রাষ্ট্র পরিকল্পনায়, সংবিধান প্রণয়নে। আর এখানেই বঙ্গবন্ধু চিরস্মরণীয় একটি নাম।
লেখক :
ড. মিল্টন বিশ্বাস
অধ্যাপক, বাংলা বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
- পরিবহন ধর্মঘটে বান্দরবানে দূরপাল্লার যানবাহন চলাচল বন্ধ, ভোগান্তিতে যাত্রীরা
- রুমায় সেনা অভিযানে ২ কেএনএফ সদস্য নিহত অস্ত্র উদ্ধার
- শেখ জামালের আজ ৭১তম জন্মদিন
- সবাইকে দেশ ও জনগণের জন্য কাজ করতে হবে
- ৯ মে থেকে হজের ফ্লাইট শুরু
- সরকারি সুবিধাভোগী নির্বাচনের প্রচারে নামলে প্রার্থীতা বাতিল: ইসি রাশেদা
- স্বাস্থ্য বিভাগে দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন
- আগামীকাল দেশের পথে রওনা হচ্ছে এমভি আবদুল্লাহ
- বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমোদন দিল ভারত
- গবেষণার মাধ্যমে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের আহ্বান প্রাণিসম্পদমন্ত্রীর
- ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে মূল সড়কে বন্ধ হচ্ছে মোটরসাইকেল: বিআরটিএ চেয়ারম্যান
- দেশের ওষুধ যাচ্ছে ১৫৭ দেশে
- থাই ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগের আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
- কেএনএফের ২ জনকে রিমান্ড শেষে জেল হাজতে প্রেরণ
- আলীকদমে বিএনপির ২ নেতাকে বহিষ্কার
- উপজেলা নির্বাচন বিষয়ে সাংবাদিকের সাথে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আব্দুল কুদ্দুস এর মতবিনিময়
- স্বামী সংসার স্বাভাবিক করতে সহযোগিতা চায় রুনা ত্রিপুরা
- চিকিৎসা খাতে থাইল্যান্ডের বিনিয়োগ চান প্রধানমন্ত্রী
- রংপুর মেডিকেল কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন
- পাহাড়ে শেখ হাসিনার আমলে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে-পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী
- এসটিপি ছাড়া নতুন ভবনের অনুমোদন নয়: গণপূর্তমন্ত্রী
- আসছে পড়াশোনার শিক্ষা চ্যানেল
- নতুন ১১ জেলা যুক্ত হচ্ছে রেল নেটওয়ার্কে
- প্রতিবন্ধীদের মূল ধারায় আনতে প্রচেষ্টা আছে সরকারের: সমাজকল্যাণ মন্ত্রী
- সিসি ক্যামেরার আওতায় আসবে কক্সবাজার
- আড়াই মাসে টিআইএনধারী বেড়েছে ২ লাখ
- শেরে বাংলার মৃত্যুবার্ষিকীতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
- দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াতে চায় বাংলাদেশ
- নারীর প্রতি বৈষম্য দূর করতে কাজ করছে সরকার
- মিয়ানমারের সেনাসহ ২৮৮ জনকে ফেরত পাঠাল বিজিবি
- বদলি হলেও চাকরিতে যোগদান করেননি নাথান বমের স্ত্রী
- কেএনএফের ২ জনকে রিমান্ড শেষে জেল হাজতে প্রেরণ
- মিয়ানমারের সেনাসহ ২৮৮ জনকে ফেরত পাঠাল বিজিবি
- বৃষ্টির জন্য আগামীকাল বান্দরবানে নামাজ অনুষ্ঠিত হবে
- হুট করে হামলা শক্তির চেয়ে নিজেদের দুর্বলতার বহিঃপ্রকাশ
- বান্দরবানে সেনা অভিযানে কেএনএর সন্ত্রাসী নিহত
- স্বামী সংসার স্বাভাবিক করতে সহযোগিতা চায় রুনা ত্রিপুরা
- বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হচ্ছেন চহ্লামং মারমা
- কেএনএফ সংগঠনের সাথে জড়িত সন্দেহে ছাত্রলীগ নেতা সহ গ্রেপ্তার ৭
- নতুন ১১ জেলা যুক্ত হচ্ছে রেল নেটওয়ার্কে
- বহিষ্কার হলেন রুমা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি
- সেনা অভিযানে কেএনএফ সদস্য নিহত
- আবহাওয়া বিবেচনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী
- বিমানবন্দর-গাজীপুর বিআরটি করিডোরের জন্য কেনা হচ্ছে ১৩৭টি এসি বাস
- গ্যাস খাতে বড় সংস্কার করবে পেট্রোবাংলা
- ডিজিটাল জরিপকালে জমির মালিকদের জানাতে হবে
- আলীকদমে বিএনপির ২ নেতাকে বহিষ্কার
- মুক্তিযুদ্ধ ও মুজিবনগর সরকার নিয়ে গবেষণার আহ্বান
- নোয়াখালীর নতুন গ্যাস কূপে খনন কাজ শুরু
- আমানতের মুনাফার ওপর কর দিতে হবে না