বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||
চৈত্র ১৪ ১৪৩০
|| ১৭ রমজান ১৪৪৫
দৈনিক বান্দরবান
প্রকাশিত: ১৮ অক্টোবর ২০২১
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের ৫৭তম জন্মবার্ষিকী আজ। ১৯৬৪ সালের এই দিনে ঐতিহাসিক স্মৃতিবিজড়িত ধানমন্ডির বঙ্গবন্ধু ভবনে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকদের নির্মম বুলেট থেকে রক্ষা পাননি শিশু শেখ রাসেল। বঙ্গবন্ধুর সাথে নরপিশাচরা নিষ্ঠুরভাবে তাকেও হত্যা করেছিল। মৃত্যুকালে তিনি ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র ছিলেন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এ বছর থেকে বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের জন্মদিন ‘শেখ রাসেল দিবস’ হিসেবে উদযাপিত হবে। দিনটি এ বছর থেকে জাতীয়ভাবে পালন করা হবে। শেখ রাসেলের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো: আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল পৃথক বাণী দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি মো: আবদুল হামিদ তার বাণীতে বলেন, দেশের শিশু-কিশোর, তরুণ প্রজন্মের কাছে শেখ রাসেল এক ভালোবাসার নাম। রাসেল দেশের আনাচে-কানাচে এক মানবিক সত্তা হিসেবে সবার মাঝে বেঁচে আছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠপুত্র শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি তার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। তিনি বলেন, দিনটিকে যথাযথভাবে উদযাপন করার জন্য সরকার এ বছর প্রথমবারের মতো শেখ রাসেলের জন্মবার্ষিকী ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত জাতীয় দিবস হিসেবে উদযাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে, যা অত্যন্ত প্রশংসনীয় একটি উদ্যোগ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, রাসেল যদি বেঁচে থাকত, তাহলে হয়তো একজন মহানুভব, দূরদর্শী ও আদর্শ নেতা আজ আমরা পেতাম, যাকে নিয়ে দেশ ও জাতি গর্ব করতে পারত। তিনি বলেন, বিভীষিকাময় সেই রাতের প্রতিটি ক্ষণ, প্রতিটি মুহূর্ত এখনো গভীর শোকের সঙ্গে স্মরণ করি। রাসেল আজ বেঁচে থাকলে কী করতÑ এই ভাবনাটা আমাকে প্রায়ই ভাবায়। আজ এত বছর পরেও শেখ রাসেলকে জাতি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছে। কারণ রাসেল তার মহানুভবতা ও ব্যবহারে ছিল অমায়িক। প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিশু রাসেলের জীবন সম্পর্কে শিশু-কিশোরদের কাছে তুলে ধরতে প্রতি বছর তার জন্মদিনকে ‘শেখ রাসেল দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রথমবারের মতো ‘শেখ রাসেল দিবস ২০২১’-এর প্রতিপাদ্য ‘শেখ রাসেল দীপ্ত জয়োল্লাস, অদম্য আত্মবিশ্বাস’-যথার্থ হয়েছে বলে আমি মনে করি।
এ দিকে শেখ রাসেলের ৫৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। দিবসটি উপলক্ষে আওয়ামী লীগ সকাল ৮টায় বনানী কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত শেখ রাসেলসহ ১৫ আগস্টে নিহতদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ, ফাতেহা পাঠ, মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ, আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগসহ বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে বনানী কবরস্থানে পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা সভা, গরিব অসহায় ও দুস্থ মানুষের মাঝে খাবার বিতরণসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হবে। আগামীকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ৩টায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে শেখ রাসেল দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গতকাল এক বিবৃতিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ উপলক্ষে আয়োজিত বিভিন্ন কর্মসূচি যথাযথভাবে পালন করার জন্য দলীয় নেতাকর্মী, সমর্থক, শুভানুধ্যায়ীসহ সর্বস্তরের জনগণের প্রতি বিভিন্ন উপযোগী কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানিয়েছেন। শেখ রাসেলের জীবনাচার বর্তমান ও আগামী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা হবে : পলক এ দিকে বাসস জানায়, শেখ রাসেলের জন্মদিন জাতীয় দিবস হিসেবে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে উদযাপন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে তার জীবনাচার বর্তমান ও আগামী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা হবে।
গতকাল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) অডিটোরিয়ামে প্রথমবারের মতো ‘ক’ শ্রেণীর জাতীয় দিবস হিসেবে ‘শেখ রাসেল দিবস-২০২১’ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদসম্মেলনে এ তথ্য জানান তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নির্মমভাবে যেভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছিল, যেভাবে দীর্ঘ ২১টি বছর দেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছিল, সেই কালো অধ্যায়কেও এই দুই প্রজন্মকে জানাতে হবে। তিনি আরো বলেন, ১৯৬৪ সালের ১৮ অক্টোবর ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কের পাশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্মৃতিবিজড়িত বাড়িতে শেখ রাসেল জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদফতর এবং শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের যৌথ আয়োজনে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলমের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদফতরের মহাপরিচালক (দায়িত্ব) মো: রেজাউল মাকছুদ জাহেদী এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের মহাসচিব কে এম শহিদ উল্যা। এর আগে শেখ রাসেলের ওপর নির্মিত অডিও ভিজ্যুয়াল প্রদর্শন এবং পরে শেখ রাসেল দিবস-২০২১-এর লোগো উন্মোচন করা হয়।
dainikbandarban.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়