শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ১৩ ১৪৩১
|| ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
দৈনিক বান্দরবান
প্রকাশিত: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২১
১৯৫২ সালের এই সময়টা নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে পার হচ্ছিল। ২১ ফেব্রুয়ারির কর্মসূচিকে সামনে রেখে রাজনীতিমনস্ক শিক্ষার্থীরা ছিলেন দারুণ ব্যস্ত। পোস্টার-ব্যানার তৈরি, ইশতাহার ছাপা ও বিতরণ, ছাত্রাবাসে যোগাযোগসহ নানা কাজ করে চলছিলেন তারা। তবে একুশের কারিগরদের ধারণা ছিল না যে, আন্দোলন দমনে মুসলিম লীগ সরকার চরম ফ্যাসিস্ট রূপ ধারণ করবে।
১৯৫২ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি ‘পাকিস্তান অবজারভার’ পত্রিকায় মুসলিম লীগ শাসনের দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি নিয়ে একটি সমালোচনামূলক নিবন্ধ প্রকাশিত হয়, যার শিরোনাম ছিল ‘ক্রিপটো ফ্যাসিজম’ (ছদ্ম ফ্যাসিজম)। এতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নাজিমউদ্দিনের দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি প্রশ্নবিদ্ধ হয়।
পরদিনই পূর্ব পাকিস্তানের নুরুল আমীন সরকার জননিরাপত্তা আইনের সুযোগ নিয়ে ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ‘পাকিস্তান অবজারভার’ পত্রিকা প্রকাশ নিষিদ্ধ করে। গ্রেফতার করা হয় পত্রিকার মালিক সাবেক মন্ত্রী হামিদুল হক চৌধুরী ও সম্পাদক আবদুস সালামকে। যদিও শেষ পর্যন্ত তারা জামিনে মুক্তি পান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলার ছাত্রসভায় সরকারের স্বৈরাচারী পদক্ষেপের প্রতি নিন্দা জানিয়ে ‘অবজারভার’-এর ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা বাতিলের দাবি তোলা হয়।
ছাত্ররা ঠিকই বুঝে ছিল যে, ভাষা আন্দোলনের কর্মসূচি ব্যাহত করার উদ্দেশ্যেই আন্দোলনের সমর্থক পত্রিকাটির প্রকাশনা নিষিদ্ধ করেছে নুরুল আমীন প্রশাসন। স্বভাবতই এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্রসমাজের প্রতিবাদ আরও তীব্র হয়। মেডিকেল কলেজের ছাত্ররা আলাদাভাবে মেডিকেল কলেজের হোস্টেলের কমনরুমে প্রতিবাদসভার আয়োজন করে এবং ‘অবজারভার’-এর ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার দাবি জানান। শুধু ছাত্রসমাজই নয়, যুবলীগও সরকারের ওই অন্যায় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানায়। তাদের বক্তব্য ছিল-সরকার ভাষা আন্দোলনের পক্ষে সমর্থন হ্রাস করতে ‘পাকিস্তান অবজারভার’-এর প্রকাশনা বন্ধ করেছে। তাই অবিলম্বে বিনা শর্তে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে হবে। ‘দৈনিক ইত্তেফাক’, ‘ইনসাফ’, ‘নওবেলাল’ প্রভৃতি পত্রিকা ‘অবজারভার’-এর পক্ষ নিয়ে নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়ার আহ্বান জানায়। তারা সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর গুরুত্বারোপ করে।
dainikbandarban.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়