শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ৬ ১৪৩১
|| ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
দৈনিক বান্দরবান
প্রকাশিত: ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১
ঢাকায় দেশের প্রথম মেট্রোরেলের জন্য উত্তরা থেকে মতিঝিল হয়ে কমলাপুর লাইনে চলাচলের জন্য ২৪ সেট ট্রেন কেনা হচ্ছে। দুপাশে দুটি ইঞ্জিন আর চারটি কোচের সমন্বয়ে ট্রেনের সেটগুলো তৈরি হচ্ছে জাপানে। এরই মধ্যে প্রস্তুত হয়েছে পাঁচ সেট ট্রেন, যার প্রথমটি দেশে এসে পৌঁছাতে পারে আগামী ২৩ এপ্রিল।
জাপানের ওবে বন্দর থেকে বাংলাদেশের উদ্দেশে ট্রেনটি রওনা দেওয়ার সম্ভাব্য তারিখ আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি। বাংলাদেশের মোংলা বন্দর থেকে উত্তরায় মেট্রোরেলের ডিপোতে ট্রেনটি এসে পৌঁছাতে পারে ২৩ এপ্রিলে। আজ বৃহস্পতিবার এসব তথ্য জানিয়েছেন মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ঢাকা মাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক।
বাংলাদেশে আনার আগে ডিএমটিসিএলের একটি বিশেষজ্ঞ দলের জাপান গিয়ে ট্রেনগুলো পরীক্ষা করার কথা ছিল। কিন্তু করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে দেশটিতে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ফলে বিকল্প হিসেবে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে ট্রেনগুলো পরিদর্শন করেছে কোম্পানিটি। ডিএমটিসিএলের পক্ষে ট্রেনগুলো পরিদর্শন করেছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানি নামের একটি প্রতিষ্ঠান। পরিদর্শন কার্যক্রম ঢাকা থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করেছেন ডিএমটিসিএলের কর্মকর্তারা।
মেট্রোরেল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সাধারণত একটি মেট্রো ট্রেন দেশে আনার আগে পাঁচ ধরনের পরীক্ষা করতে হয়। আনার পর আরও ১৪ ধরনের পরীক্ষা করতে হবে। কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে আনার পর সবগুলো পরীক্ষা করা হবে। এরপর শুরু হবে ট্রায়াল রান। অন্তত ছয় মাস ট্রায়াল রান করার পর যাত্রী পরিবহন শুরু করা যায়।
ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক জানিয়েছেন, পর্যায়ক্রমে বাকি ট্রেনগুলোয় দেশে চলে আসবে। দ্বিতীয় সেট ট্রেনটি জাপান থেকে ১৫ এপ্রিল রওনা হওয়ার কথা রয়েছে। সেটি ঢাকায় পৌঁছাতে পারে ১৬ জুন। আর তৃতীয় ট্রেনটি ১৩ জুন রওনা দিয়ে ১৩ আগস্ট পৌঁছাতে পারে। ট্রেনগুলো প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ট্রায়াল রান দ্রুত শুরু করা হবে।
এম এ এন ছিদ্দিক বলেন, মেট্রোরেলের ট্রেনের ট্রায়াল রান শুরু করতে হলে ন্যূনতম তিনটি স্টেশন প্রস্তুত করে রাখা দরকার। সেখানে এরই মধ্যে পাঁচটি স্টেশন প্রস্তুত। ডিপো এলাকায় ট্রেনগুলো রাখা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্যও পর্যাপ্ত অবকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ১৬ ডিসেম্বর মেট্রোরেলের যাত্রা শুরুর আশা করছেন তিনি।
মেট্রোরেলের ট্রেনগুলো বানাচ্ছে জাপানি প্রতিষ্ঠান কাওয়াসাকি-মিতসুবিশি। সব মিলে ২৪ সেট ট্রেনের দাম পড়ছে ৩ হাজার ২০৮ কোটি ৪২ লাখ টাকা। শুল্ক ও ভ্যাট মিলিয়ে এসব ট্রেন বাংলাদেশে আনার পর মোট খরচ হবে ৪ হাজার ২৫৭ কোটি ৩৪ লাখ টাকা।
ট্রেনগুলোয় ডিসি ১৫০০ ভোল্টেজ বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা থাকবে। স্টেইনলেস স্টিল বডির ট্রেনগুলোয় থাকবে লম্বালম্বি সিট। প্রতিটি ট্রেনে থাকবে দুটি হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত প্রতিটি বগির দুপাশে থাকবে চারটি করে দরজা। জাপানি স্ট্যান্ডার্ডের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সংবলিত প্রতিটি টেনের যাত্রী ধারণক্ষমতা হবে ১ হাজার ৭৩৮ জন। ভাড়া পরিশোধের জন্য থাকবে স্মার্টকার্ড টিকিটিং ব্যবস্থা।
মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের জুনে। এখন পর্যন্ত প্রকল্পটির সার্বিক অগ্রগতি ৫৭ শতাংশ। প্রকল্পের মোট ব্যয় ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১৬ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকা দিচ্ছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) ও ৫ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা বাংলাদেশ সরকারের।
dainikbandarban.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়