বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ ||
বৈশাখ ২৫ ১৪৩১
|| ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫
দৈনিক বান্দরবান
প্রকাশিত: ১৭ জুলাই ২০২২
স্যান্ডহার্স্টের প্রশিক্ষণ ও সেনাবাহিনীতে যোগদান
স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭৪ সালের ২৯ জানুয়ারি যুগোস্লাভিয়ার প্রেসিডেন্ট মার্শাল টিটো রাষ্ট্রীয় সফরে আসেন। শেখ জামালের মধ্যে সেনাবাহিনীতে যোগদানের প্রবল আগ্রহ দেখে টিটো তাকে যুগোস্লাভিয়া মিলিটারি একাডেমিতে প্রশিক্ষণের প্রস্তাব দেন। ওই বছরের বসন্তে ঢাকা কলেজের ছাত্র ও একাত্তরের কিশোর মুক্তিযোদ্ধা শেখ জামাল যুগোস্লাভিয়ার মিলিটারি একাডেমিতে ক্যাডেট হিসেবে যোগদান করেন। কিন্তু একেবারে ভিন্ন পরিবেশ, প্রতিকূল আবহাওয়া এবং ভাষাগত অসুবিধার কারণে সেই প্রশিক্ষণের সঙ্গে তাল মেলানো তার পক্ষে কঠিন হয়ে পড়েছিল। এই পরিস্থিতিতে মার্শাল টিটো শেখ জামালকে ব্রিটেনের স্যান্ডহার্স্টে প্রশিক্ষণ গ্রহণের পরামর্শ দেন, যেখানে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর তরুণ অফিসারদের প্রাথমিক প্রশিক্ষণ পরিচালিত হয়। সে সময় প্রশিক্ষণ একাডেমির কমান্ড্যান্ট ছিলেন মেজর জেনারেল রবার্ট ফোর্ড।
১৯৭৪ সালের শরতে বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সামরিক একাডেমি স্যান্ডহার্স্টে সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণের লক্ষ্যে শেখ জামাল লন্ডনে গিয়ে পৌঁছান। তবে স্যান্ডহার্স্টের পূর্বশর্ত হিসেবে তাকে ব্রিটেনের আর্মি স্কুল অব ল্যাংগুয়েজ এবং বেকনসফিল্ড থেকে প্রয়োজনীয় পূর্ব-প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে হয়। লন্ডনে যাওয়ার পর তিনি ‘সেলফ্রিজ’ নামের একটি দোকানে সেলসম্যানের চাকরি নেন। সেই উপার্জন দিয়ে তিনি নিজের হাত খরচ চালান এবং স্যান্ডহার্স্টে ভর্তির প্রস্তুতি নিতে থাকেন। ১৯৭৫ সালের ৩ জানুয়ারি স্যান্ডহার্স্টের স্ট্যান্ডার্ড মিলিটারি কোর্স-৮ শুরু হয় এবং একই বছর ২৭ জুন অংশগ্রহণকারীদের পাসিং আউট প্যারেড অনুষ্ঠিত হয়। বিদেশি ক্যাডেটদের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে কমিশন লাভ করেন তিনজন গর্বিত তরুণ- অফিসার ক্যাডেট শেখ জামাল, আলাউদ্দিন মো. আবদুল ওয়াদুদ এবং মাসুদুল হাসান। শেখ জামাল ১৯৭৫ সালের ১ আগস্ট থেকে স্যান্ডহার্স্টেই পোস্ট গ্রাজুয়েশন কোর্সে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পান। কিন্তু মায়ের প্রতি গভীর ভালোবাসা এবং তার দুই প্রিয় বন্ধু বাংলাদেশে ফিরে যাচ্ছেন জেনে তিনি দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নিলেন। তবে দেশে কিছুদিন থেকে আবার পোস্ট গ্রাজুয়েশন কোর্সে ভর্তি হওয়ার ইচ্ছে ছিল তার।
স্যান্ডহার্স্ট একাডেমি থেকে ফিরে সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট শেখ জামালের পোস্টিং হলো ঢাকা সেনানিবাসের দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গলে। এখানে তার চাকরিকাল ছিল প্রায় দেড় মাস। এরই মধ্যে তিনি পরিবারের মতামতে সেনাবাহিনীর অনুমোদন নিয়ে ১৯৭৫ সালের ১৭ জুলাই ফুফাত বোন পারভীন রোজীকে বিয়ে করেন। তিনি সেনাবাহিনীর গাড়িতে চড়ে নিয়মানুবর্তীতার সঙ্গে অফিস করতেন। স্বল্প সময়েই তিনি অফিসার ও সৈনিকদের মধ্যে চমৎকার পেশাগত দক্ষতা ও আন্তরিকতার ছাপ রেখেছিলেন।
dainikbandarban.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়