শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ৭ ১৪৩১
|| ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
দৈনিক বান্দরবান
প্রকাশিত: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১
Our World In Data-র সর্বশেষ আপডেট অনুসারে, বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে কমপক্ষে ২.০৮ মিলিয়ন অর্থাৎ ২০ লাখ ৮০ হাজার কোভিড-১৯ ভ্যাক্সিনের ডোজ সরবরাহ করা হয়েছে। কোভিড -১৯ ভ্যাকসিনের কমপক্ষে একটি ডোজ নিয়েছে এমন লোকের সংখ্যা অনুসারে, ২০ শে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত, সারা বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান ১১। টিকাদান করে কোভিড নিয়ন্ত্রণ করার প্রতিযোগিতায় স্পেন, পোল্যান্ড এবং কানাডার মতো উন্নত দেশকে পেছনে ফেলে অনেক এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ।
বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের মাধ্যমে সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ার (এসআইআই) সাথে ৩০ মিলিয়ন (৩ কোটি) ডোজ কেনার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছিল বাংলাদেশ। চুক্তি অনুযায়ী ৫ মিলিয়ন (৫০ লাখ) ডোজ আগেই দেশে এসেছে এবং আরও ২ মিলিয়ন (২০ লাখ) ডোজ ২২ ফেব্রুয়ারি রাতের মধ্যে চলে আসার কথা। দ্য ইকোনমিস্টের রিপোর্ট অনুযায়ী, বেশিরভাগ স্বল্প-আয়ের দেশগুলি ২০২৩ সালের আগে ভ্যাকসিন পাবে না। কিন্ত, আমরা সবাইকে চমক দেখিয়ে বিশ্বের অনেক বড় বড় অর্থনীতির অনেক দেশের আগেই টিকাদান শুরু করতে পেরেছি।
ফেব্রুয়ারির শুরুতে প্রথম টিকা দেওয়ার পর থেকে বাংলাদেশ ইউরোপীয় ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি দেশ থেকে এগিয়ে রয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের অনেকগুলো দেশ এখনও ভ্যাকসিনের প্রথম চালানই পায়নি। দক্ষিণ কোরিয়া ও অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশগুলো শুরুতে নতুন ভ্যাকসিনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করা পর্যন্ত অপেক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। আবার, জাপান বহু বছরের পুরনো আমলাতন্ত্র এবং বিদেশী ফার্মাসিউটিকালসের প্রতি অবিশ্বাসের কারণে ভ্যাক্সিনেশনে সামনে এগোতে পারেনি। ফলাফল, বৈশ্বিক পাওয়ার হাউস হিসেবে পরিচিত জাপান, কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া আর কানাডাকে ছাড়িয়ে সম্প্রতি বৈশ্বিক কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন রোলআউটের আলোকে বাংলাদেশ একটি দুর্দান্ত সফল রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। বাংলাদেশের এই সাফল্যের রহস্য কী?
প্রথমত, যোগ্য ও দক্ষ নেতৃত্ব। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনাভাইরাসের টিকা নেওয়ার ব্যাপারে বর্তমান সরকারের সিদ্ধান্ত ছিল খুবই সময়োপযোগী। কোভিড ভ্যাক্সিন কূটনীতিতে ভোজবাজি দেখিয়ে বন্ধু ভারত থেকে ৩ কোটি ডোজের অতিরিক্ত ২০ লাখ ডোজ উপহারও পেয়ে যায় বাংলাদেশ।
দ্বিতীয়ত, আমাদের অতীতের টিকাদান কর্মসূচির অভিজ্ঞতা। নব্বই এর দশক থেকে দেশব্যাপী টিকাদান কর্মসূচি পরিচালনা করে আসছে বাংলাদেশ। প্রতিবছর টিকাদান কর্মসূচির আওতায় টিকা নেয় লাখ লাখ শিশু। ২০১৪ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বাংলাদেশকে "পোলিও মুক্ত দেশ" হিসেবে ঘোষণা দেয়, যা ছিল বর্তমান সরকারের অন্যতম উল্লেখযোগ্য সাফল্য । দেশব্যাপী বিস্তৃত টিকাদান কর্মসূচির আওতায় অভিজ্ঞ ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী এবং সরবরাহ ব্যাবস্থাকে কাজে লাগিয়ে কোভিড-১৯ টিকাদানের ক্ষেত্রেও চমক দেখিয়েছে বাংলাদেশ। নিকট ভবিষ্যতে "পোলিও মুক্ত বাংলাদেশের" মতোই "কোভিড মুক্ত বাংলাদেশ" দেখার অপেক্ষায় মুখিয়ে আছে সারা বিশ্ব।
dainikbandarban.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়