শনিবার ১৮ মে ২০২৪ ||
জ্যৈষ্ঠ ৪ ১৪৩১
|| ০৯ জ্বিলকদ ১৪৪৫
দৈনিক বান্দরবান
প্রকাশিত: ২ এপ্রিল ২০২০
কক্সবাজার শহরের লালদীঘির পাড় এলাকায় জুতা সেলাই ও পালিশের কাজ করেন নির্মল শীল। কথা বলে জানা গেল, গত ছয়দিন তিনি বাসায় থাকলেও জমানো টাকা ও খাবার শেষ হয়ে যাওয়ায় পরিবারের সদস্যদের কথা চিন্তা করে আজ কাজে (বৃহস্পতিবার) বের হয়েছেন।
সকালে সেনা সদস্যদের ঝটিকা ত্রাণ বিতরণের সময় তিনি এক প্যাকেট ত্রাণ পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে যান। তিনি বলেন, তার মতো হতদরিদ্র ও খেটে খাওয়া মানুষদের এভাবে সহযোগিতা করলে এ দুর্যোগ কেটে না যাওয়া পর্যন্ত আর ঘরের বাইরে বের হবেন না। একই অভিপ্রায় ব্যক্ত করলেন শহরের বাস টার্মিনাল এলাকার রিকশাচালক মজনু আলী। তিন ছেলে মেয়ে ও বউ নিয়ে তার সংসার পেকুয়া উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়নের একটি গ্রামে। শহরে রিকশা চালিয়ে দুই পয়সা ভাল আয় রোজগারের জন্য একটি মেসে কষ্ট করে থাকেন। জমানো টাকা থেকে গত ৬-৭ দিন কেটে গেলেও পেটের তাগিদে আজকে বাধ্য হয়ে রিকশা নিয়ে বের হয়েছেন রাস্তায়। কিন্তু আশানুরূপ যাত্রী না থাকায় যখন হতাশাগ্রস্ত বোধ করছিলেন তখনই সেনাবাহিনীর ত্রাণ পেয়ে তার মুখে খুশির হাসি বয়ে যায়। তিনি জানান, আগামী ১০ দিন তিনি আর বাইরে রিকশাচালাতে বের হবেন না। এভাবে বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী কক্সবাজারে শহর ও তার আশপাশের এলাকায় শতাধিক অসহায়, হতদরিদ্র মানুষের মাঝে খাদ্য সাম্রগী বিতরণ করে মুখে হাসি ফেরান সেনাবাহিনী। এছাড়াও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে টহল জোরদার করেছে সেনাবাহিনী। সকাল থেকে কক্সবাজার শহর ও তার আশপাশের এলাকায় সচেতনতামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেন তারা। মাইকিং করে সেনারা জনগণকে অযথা ঘুরে ফেরা না করে ঘরে ফিরে যাওয়ার আহবান জানান। সচেতনতার পাশাপাশি কক্সবাজার শহরের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল, কলাতলী এলাকা এবং ফিশারিঘাট এলাকায় সেনাবাহিনীর ১০ পদাতিক ডিভিশন ও এরিয়া কমান্ডার কক্সবাজার এরিয়া মেজর জেনারেল মো. মাঈন উল্লাহ চৌধুরী দুস্থ ও খেটে খাওয়া দরিদ্র মানুষের মধ্যে চাল, ডাল, আলু, লবণ ও তেলসহ বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় এসব খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন। এ সময় দুই পদাতিক ব্রিগেডের ব্রিগেড কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আলীমুল আমীন, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন, পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন ও কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব.) ফোরকান আহমদ উপস্থিত ছিলেন। আপনার সুস্থতাই আমাদের কাম্য- এই মূলমন্ত্রকে সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী গত ২৪ মার্চ থেকে কক্সবাজার জেলা এবং বৃহত্তর চট্টগ্রামের আটটি উপজেলায় রামু সেনানিবাসের সদস্যরা করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে জনসচেতনতা তৈরিতে বেসামরিক প্রশাসনকে সহযোগিতার লক্ষ্যে দিন-রাত কাজ করছেন।
dainikbandarban.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়