ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় ইসলাম
দৈনিক বান্দরবান
প্রকাশিত: ৯ ডিসেম্বর ২০২২
সামাজিক অস্থিরতা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে মনে হয় এর মূল কারণ ন্যায়বিচারের ঘাটতি। কেননা দেখা যায় বড় ধরনের অপরাধ করার পরও কোনো কোনো ক্ষেত্রে অপরাধী তার শাস্তি থেকে মুক্ত থাকে আর অপরাধীকে সার্বিক সহযোগিতাও করতে দেখা যায় একটি বিশেষ মহল।
অথচ পবিত্র কুরআনের শিক্ষা হচ্ছে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে যদি নিজ পিতা-মাতার বিরুদ্ধেও সাক্ষ্য দিতে হয় তা যেন দেওয়া হয়। আর আমরা আজ করছি উলটা, অপরাধী নিজের আত্মীয়স্বজন হলে তাকে কীভাবে রক্ষা করা যায় সে চেষ্টায় কোনো কমতি করি না।
আজ যারা সমাজ ও দেশে নানা অপকর্ম করছে তারা তো কোনো না কোনো পরিবারেরই সদস্য। অপরাধীদের পরিবার যদি প্রথমে সোচ্চার হতো তাহলে হয়তো অপরাধের মাত্রা এমনিতেই অনেক কমে যেত কিন্তু আমরা তা করছি না।
এ জন্যই বিচার সালিশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে ইসলাম অত্যধিক গুরুত্বারোপ করেছে। পবিত্র কুরআনে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে যারা ইমান এনেছ! আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে সাক্ষ্যদাতা হিসাবে তোমরা দৃঢ়ভাবে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠাকারী হও, এমনকি সেই সাক্ষ্য তোমাদের নিজেদের বা পিতামাতার অথবা নিকটাত্মীয়দের বিরুদ্ধে গেলেও।
যার সম্পর্কে সাক্ষ্য দেওয়া হচ্ছে, সে ধনী হোক বা গরিব, আল্লাহ উভয়েরই সর্বোত্তম অভিভাবক। অতএব, তোমরা যাতে ন্যায়বিচার করতে সক্ষম হও, সে জন্য তোমরা কুপ্রবৃত্তির অনুসরণ করো না আর তোমরা যদি পেঁচানো কথা বল অথবা সত্য এড়িয়ে যাও, তবে মনে রেখ, তোমরা যা কর সে বিষয়ে নিশ্চয় আল্লাহ পুরোপুরি অবগত আছেন।’ (সূরা আন নিসা, আয়াত : ১৩৫)।
এ আয়াতে শুধু সুবিচারের কথাই স্পষ্ট করে তুলে ধরা হয়নি, বরং সুবিচার প্রতিষ্ঠার অপরিহার্য শর্তাবলিও উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন, শুধু সুবিচার প্রতিষ্ঠাই নয়, বরং সুবিচারের পতাকাকেও সমুন্নত রাখতে হবে। যেখানেই ন্যায়বিচার ভূলুণ্ঠিত হতে দেখা যাবে, সেখানে তা সমুন্নত করাতে সর্বশক্তি নিয়োগ করতে হবে। মামলায় কোনো পক্ষের হার-জিতের জন্য সাক্ষ্য নয়, বরং শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্যই সাক্ষ্য দিতে হবে।
কেননা, সত্য সাক্ষ্য ব্যতিরেকে সুবিচার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। সত্য সাক্ষ্য দিতে গিয়ে যদি নিজেদের স্বার্থে আঘাত লাগে অথবা নিজ পিতা-মাতার বা নিকটাত্মীয় পরিজনের প্রতিকূলেও যদি যায়, তবুও সত্য সাক্ষ্য দিতে হবে। ন্যায়বিচারের উচ্চ মানদণ্ড ছাড়া সত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত হওয়া সম্ভব নয়। তাই ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হলে একমাত্র সত্যকেই মাধ্যম বানাতে হবে।
আল্লাহতায়ালা আরও ইরশাদ করেন, ‘হে যারা ইমান এনেছ! আল্লাহর উদ্দেশ্যে তোমরা ন্যায়ের পক্ষে সাক্ষী হিসাবে দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত হও আর কোনো জাতির শত্রুতা যেন কখনোই তোমাদের অবিচার করতে প্ররোচিত না করে। তোমরা সদা ন্যায়বিচার করো। এ কাজটি তাকওয়ার সবচেয়ে নিকটে। আর তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন করো। তোমরা যা কিছু কর, নিশ্চয় আল্লাহ সে বিষয়ে পুরোপুরি অবগত আছেন।’ (সূরা মায়েদা, আয়াত : ৮)।
ওই আয়াতের নিরিখে হজরত ওমর ফারুক (রা.) কাযী শুরায়হ-এর নামে একটি আদেশ লিখে পাঠিয়েছিলেন। তিনি (রা.) লিখেন ‘বিচার সভায় দরকষাকষি করবে না, কারও সঙ্গে বিবাদে লিপ্ত হবে না। কোনো ধরনের ক্রয়-বিক্রয় করবে না এবং রাগান্বিত অবস্থায় তুমি দুই ব্যক্তির মধ্যে বিচারের চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করবে না’ (তানতাবি, ওমর ইবনুল খাত্তাব, পৃ. ৩০৭)।
হজরত দাউদ (আ.) কে আল্লাহপাক নির্দেশ দিয়েছিলেন, ‘হে দাউদ! আমি তোমাকে পৃথিবীতে প্রতিনিধি করেছি, অতএব, তুমি লোকদের মধ্যে সুবিচার করো এবং খেয়াল খুশির অনুসরণ করো না, কেননা এটা তোমাকে আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করবে। যারা আল্লাহর পথ থেকে ভ্রষ্ট হয় তাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি, কারণ তারা বিচার দিবসকে ভুলে গিয়েছিল।’ (সূরা সাদ, আয়াত : ২৭)।
ইসলাম একটি শান্তিপ্রিয় ধর্ম এবং এর শিক্ষা অত্যন্ত উচ্চাঙ্গের। ইসলামের শিক্ষাগুলোর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা হলো সমাজ ও দেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা। আল্লাহপাকের পক্ষ পৃথিবীতে এ পর্যন্ত থেকে যত নবি-রাসূল (আ.)-এর আগমন ঘটেছে, তাদের প্রত্যেককে আল্লাহতায়ালা বিশেষ যেসব দায়িত্ব দিয়েছেন তার মধ্যে প্রধান দায়িত্ব ছিল বিচার সালিশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা। আল্লাহতায়ালার নির্দেশ অনুযায়ী সব নবি রাসূলই (আ.) দেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করেছেন এবং এ ক্ষেত্রে সফলও হয়েছেন।
ইসলামে ন্যায়বিচারের শিক্ষা এমন এক অনিন্দসুন্দর শিক্ষা, যা ন্যায়পরায়ণ প্রত্যেক অমুসলিমও শুনে প্রশংসা না করে পারে না। পৃথিবীতে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত করাই মহানবি (সা.)-এর আগমনের উদ্দেশ্য এবং তিনি নিজ আমল দ্বারা সর্বত্র ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষমও হয়েছিলেন। পবিত্র কুরআনে যেভাবে বলা হয়েছে ‘বল, আমার প্রভু আমাকে ন্যায়বিচার করার নির্দেশ দিয়েছেন।’ (সূরা আরাফ, আয়াত : ২৯)।
বিচার সালিশের ক্ষেত্রে যেন পরিপূর্ণ ন্যায়বিচার করা হয় এ বিষয়ে মহানবি (সা.) দ্যর্থহীনভাবে ঘোষণা করেছেন, ‘হে মানবমণ্ডলী! নিশ্চয়ই তোমাদের পূর্ববর্তী লোকেরা পথভ্রষ্ট হয়ে গেছে। এ জন্য যে তাদের কোনো সম্মানিত লোক চুরি করলে তখন তারা তাকে রেহাই দিয়ে দিত। আর যখন কোনো দুর্বল লোক চুরি করত তখন তারা তার ওপর শাস্তি প্রয়োগ করত। আল্লাহর কসম! মুহাম্মদের কন্যা ফাতেমাও যদি চুরি করে, তবে অবশ্যই মুহাম্মদ (সা.) তার হাত কেটে দেবেন।’ (বুখারি)।
আল্লাহতায়ালার অনুপম শিক্ষা এবং ইসলামের সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির বহিঃপ্রকাশ তখনই সম্ভব হবে, যখন প্রত্যেক মুসলমান আল্লাহপাকের প্রতিটি আদেশের ওপর আমল করবে। ন্যায়বিচারের আদর্শ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে নিজেদের ঘর, সমাজ, আপন-পর, এমনকি শত্রু-মিত্র নির্বিশেষে সবার সঙ্গে ন্যায়সুলভ ব্যবহারের মাধ্যমেই আমরা মহানবির (সা.) প্রকৃত অনুসারী বলে দাবি করতে পারি।
পবিত্র কুরআনে আল্লাহপাক আরও ইরশাদ করেছেন ‘আর মুমিনদের দুদল যুদ্ধে লিপ্ত হলে তাদের মাঝে তোমরা মীমাংসা করে দিও। এরপর তাদের মাঝে একদল অন্যদলের বিরুদ্ধে সীমালঙ্ঘন করলে যে দল সীমালঙ্ঘন করে, তারা আল্লাহর সিদ্ধান্তের দিকে ফিরে না আসা পর্যন্ত তোমরা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করো। এরপর তারা আল্লাহর সিদ্ধান্তের দিকে ফিরে এলে তোমরা উভয়ের মাঝে ন্যায়পরায়ণতার সঙ্গে মীমাংসা করে দিও এবং সুবিচার করো।
নিশ্চয় আল্লাহ সুবিচারকারীদের ভালোবাসেন।’ (সূরা আল হুজুরাত, আয়াত : ৯)। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে শান্তি বজায় রাখার ব্যাপারে পবিত্র কুরআনের এ নীতিমালা এক মহারক্ষাকবচ। মুসলিম বিশ্ব যদি আজ পবিত্র কুরআনের এ নীতির ওপর আমল করে, তাহলে বিশ্বময় এই যে অশান্তি আর অরাজকতা তার কোনো প্রশ্নই থাকবে না।
সমাজে আজকে বিচার সালিশে ন্যায়বিচারের বড়ই অভাব আর এ কারণেই সর্বত্র বিশৃঙ্খলা, সামাজিক অস্থিরতা আর অরাজকতা দেখা দিচ্ছে। সমাজ ও দেশে শান্তির জন্য বিচার সালিশে ন্যায়বিচারের বিকল্প নেই। বিচার সালিশের দায়িত্বরত ব্যক্তিদের আল্লাহপাক ন্যায়বিচার করার তৌফিক দান করুন, আমিন।
লেখক :মাহমুদ আহমদ
ইসলামি গবেষক ও কলামিস্ট
- আর্তমানবতার সেবায় রেডক্রিসেন্ট সর্বদাই নিয়োজিত - বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি
- কোনো শক্তি আমাকে জনগণ থেকে দূরে সরাতে পারবে না
- রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানিগুলোকে শেয়ারবাজারে আনার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
- রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানিগুলোকে শেয়ারবাজারে আনার নির্দেশ প্রধানমন্ত্র
- প্রধানমন্ত্রীকে মোদির আমন্ত্রণপত্র দিলেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব
- ড. ওয়াজেদ মিয়া ছিলেন আণবিক গবেষণার পথিকৃৎ
- তিস্তার প্রকল্পে অর্থায়নে আগ্রহী ভারত
- কলম্বো সিকিউরিটি কনক্লেভের সদস্য হচ্ছে বাংলাদেশ
- বছর শেষে আসছে রূপপুরের বিদ্যুৎ
- রোহিঙ্গাদের সহায়তায় ৩০ মিলিয়ন ডলার দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
- যমুনায় দৃশ্যমান হলো বঙ্গবন্ধু রেল সেতু
- শাস্তির বিধান রেখে হচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা ও সুরক্ষা আইন
- বাণিজ্যে অবদান রাখায় সিআইপি কার্ড পেলেন ১৮৪ ব্যবসায়ী
- স্থাবর সম্পত্তি অর্জনে অনুমতি লাগবে বিদেশি সংস্থার
- ড. ওয়াজেদ কর্মের জন্য ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে বেঁচে থাকবেন : প্রেসিডেন্ট
- মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাতের প্রভাব বাংলাদেশেও পড়বে : প্রধানমন্ত্রী
- মুসলিম দেশগুলোর ঐক্য ফিলিস্তিনিদের দুর্দশা কমাতে পারে: প্রধানমন্ত্রী
- জাতিসংঘের দুর্নীতি প্রতিরোধী সংস্থার সদস্য হলো বাংলাদেশ
- সড়কে গাড়ির গতি বেঁধে দিল সরকার
- হজযাত্রীদের নিয়ে ঢাকা ছাড়ল প্রথম ফ্লাইট
- ৬০ লাখ কর্মী বিদেশে পাঠানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে : শফিকুর রহমান
- ডোনাল্ড লু’র সফরে রোহিঙ্গা সংকটকে গুরুত্ব দেওয়া হবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
- পরীক্ষামূলক ট্রেন চালানোর প্রস্তুতি
- সমুদ্রে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে দরপত্র কিনেছে ৭ কোম্পানি
- বঙ্গোপসাগরে বিনিয়োগ ঝুঁকিমুক্ত
- পর্যটক-শূন্যতায় রুমা ও থানচির হোটেল রিসোর্ট
- পাহাড়ে অর্ধশত ইটভাটা
- বন্ধুর বাইকে এসে ভোট দিলেন দিল্লী কুমার
- আলীকদম উপজেলায় বিজয়ী হলেন যারা
- বান্দরবানে অপহরণের দায়ে ১৪ বছরের কারাদণ্ড
- উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেয়ায় বান্দরবানে বিএনপির ৫ নেতা বহিষ্কার
- নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে আহত ৩ জন
- অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন অক্লান্ত পরিশ্রম করছে- জেলা প্রশাসক
- বদলি হলেও চাকরিতে যোগদান করেননি নাথান বমের স্ত্রী
- ভোট কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা হলে কেন্দ্র বন্ধ করে দেয়া হবে - বান্দরবান জেলা প্রশাসক
- মিয়ানমারের সেনাসহ ২৮৮ জনকে ফেরত পাঠাল বিজিবি
- কেএনএফের ২ জনকে রিমান্ড শেষে জেল হাজতে প্রেরণ
- প্রধানমন্ত্রী আজ দেশে ফিরছেন
- বান্দরবানে মে দিবস উদযাপন
- বৃষ্টির জন্য আগামীকাল বান্দরবানে নামাজ অনুষ্ঠিত হবে
- পরিবহন ধর্মঘটে বান্দরবানে দূরপাল্লার যানবাহন চলাচল বন্ধ, ভোগান্তিতে যাত্রীরা
- হুট করে হামলা শক্তির চেয়ে নিজেদের দুর্বলতার বহিঃপ্রকাশ
- বান্দরবানে সেনা অভিযানে কেএনএর সন্ত্রাসী নিহত
- বৃষ্টিতে স্বস্তি নগরজুড়ে
- বান্দরবান সদরে আব্দুল কুদ্দুছ আলীকদমে জামাল উদ্দীন চেয়ারম্যান নির্বাচিত
- বান্দরবানে প্রিজাইডিং, সহকারী প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসারদের প্রশিক্ষণ
- ড. ওয়াজেদ কর্মের জন্য ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে বেঁচে থাকবেন : প্রেসিডেন্ট
- রুমায় সেনা অভিযানে দুই কেএনএ সন্ত্রাসী নিহত
- বান্দরবান পৌর এলাকায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড
- স্বামী সংসার স্বাভাবিক করতে সহযোগিতা চায় রুনা ত্রিপুরা