সোমবার ২০ মে ২০২৪ ||
জ্যৈষ্ঠ ৬ ১৪৩১
|| ১১ জ্বিলকদ ১৪৪৫
দৈনিক বান্দরবান
প্রকাশিত: ২৯ আগস্ট ২০২২
ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ কেন্দ্র করে চরম বিপাকে পড়েছে অর্থনীতি। সরকার মূলত প্রয়োজনীয় এবং অপ্রয়োজনীয় আমদানি কমানোর মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রার সংরক্ষণ নিশ্চিত রাখতে চায়। এর লক্ষ্যে এরইমধ্যে সরকার ব্যয়বহুল জ্বালানি পণ্য-তেল, তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি কমিয়ে আনার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ফলে চাহিদার তুলনায় এখন দেশে কম বিদ্যুৎ উৎপাদন হওয়ায় শিডিউল অনুযায়ী হচ্ছে লোডশেডিং। এ ছাড়াও জ্বালানি সাশ্রয়ী বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করে সরকার বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনা ঠিক রাখার চেষ্টা করছে। বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি সাশ্রয়ে সরকারের গ্রহণ করা সব ধরনের সিদ্ধান্ত যাতে কার্যকর হয় সে লক্ষ্যে বিভাগীয় কমিশনারদের সঙ্গে গত রবিবার বৈঠক করেছেন জ্বালানি বিভাগের সিনিয়রসচিব মাহবুব হোসেন। বৈঠকে উপস্থিত আরও ছিলেন অতিরিক্তসচিব (প্রশাসন) আ. মো. খালেক মল্লিক, যুগ্ন সচিব (অপারেশন) হাফিজুর রহমান চৌধুরীসহ উর্দ্ধত্মন কর্মকর্তারা।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, সভায় বিভাগীয় কমিশনারদের ১০ দফা নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ সময় বিভাগীয় কমিশনাররাও তাদের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভিন্ন এলাকার সমস্যার কথা তুলে ধরে সংকট সমাধানের উদ্যোগ নিতে জ্বালানি বিভাগকে আহ্বান জানান। বৈঠকে বিভাগীয় কমিশনারদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, গ্যাস বিতরণ কোম্পানিগুলোর আওতাধীন আবাসিক, শিল্প এবং বাণিজ্যিক গ্রাহকদের কাছ থেকে বকেয়া বিল আদায়ে ডিসিদের সার্বিক সহযোগিতা করা। এ ছাড়াও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালানার মাধ্যমে যাতে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করাসহ বকেয়া পাওনা আদায়ে কঠোর অবস্থানে থাকেন তারা। সাম্প্রতিক সময়ে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হয়। সেখানে রংপুর অঞ্চলের বিভাগীয় কমিশনার জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় কৃষকদের সংকটের কথা তুলে ধরেন। এ সময় তেলের দাম বৃদ্ধির যৌক্তিকতা তুলে ধরে জ্বালানি বিভাগ। বলা হয়েছে, আর্ন্তজাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেশি হওয়ার কারণে আমদানি ও বিক্রয় করতে গিয়ে গত ছয় মাসে বিপিসি আট হাজার ১৪ কোটি টাকা লোকসান করেছে। এ ছাড়া পার্শ্ববর্তী দেশের সঙ্গে আমাদের জ্বালানি তেলের দামের পার্থক্য থাকায় পাচার হওয়ার শঙ্কা আছে। তাই বিষয়টি নিয়ে সতর্ক থাকতে সীমান্তবর্তী এলাকার বিভাগীয় কমিশনারদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, জ্বালানি বিভাগ বেশ কয়েকটি বিষয়ে বিভাগীয় কমিশনারদের মাধ্যমে ডিসিদের সহযোগিতা চেয়েছেন। যার মধ্যে অন্যতম দেশের ২২৭১টি ফিলিং স্টেশন ডিলার, ৬৬৩টি প্যাকড পয়েন্ট ডিলার এবং ২৯১৯টি এজেন্ট বা ডিস্ট্রিবিউটর ও ৩১২৫টি এলপি গ্যাস ডিলার এবং ১১৬টি মেরিন ডিলারের মাধ্যমে যে জ্বালানি পণ্য বিক্রি হচ্ছে, সেগুলো যাতে সরকার নির্ধারিত দামে হয় সেটা নিশ্চিত করা। একইসঙ্গে ভেজাল রোধে নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার অনুরোধ করা হয়েছে।
বৈঠক সূত্র বলছে, দশ দফা নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে জ্বালানি তেল পাচাররোধে বিভাগীয় কমিশনারদের মাধ্যমে ডিসিদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান। জ্বালানি তেলে ভেজাল রোধ ও ওজনে কম দেওয়ার বিষয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা। চূড়ান্ত অনুমোদন ছাড়া যত্রতত্র ফিলিং স্টেশন নির্মাণ করে তেল বিক্রি না করা। গ্যাস অনুসন্ধান ও জরিপ কাযক্রমে ডিসিদের সার্বিক সহযোগিতা। বিভিন্ন নদী ও ছরা থেকে অবৈধ পাথর উত্তোলন বন্ধ করা। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে জনমনে যে ভীতির সঞ্চার হয়েছে সেটি দূর করার বিষয়ে ডিসিদের কাজ করতে নির্দেশনা দেওয়া।
dainikbandarban.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়