শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ ||
জ্যৈষ্ঠ ৩ ১৪৩১
|| ০৮ জ্বিলকদ ১৪৪৫
দৈনিক বান্দরবান
প্রকাশিত: ১১ নভেম্বর ২০১৮
তা নিশ্চিত না হলেও ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে শত শত কোটি টাকার দুর্নীতি করে নিজেদের আরাম-আয়েশকে নিশ্চিত করেছেন অনেকেই। এখন মুখে বাণীর বাহার থাকলেও তখন খুঁজেছেন টাকার খনি। তাদেরই একজন মির্জা আব্বাস। বিতর্কিত এই রাজনীতিবিদের অজানা অধ্যায়গুলো চলুন জেনে নেয়া যাকঃ
মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে রয়েছে দুর্নীতির ১৭টি মামলা। আব্বাসের বিরুদ্ধে ১৪৩ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ আছে। ইতোমধ্যে দুদক সেসব অভিযোগের প্রমাণাদিসহ আদালতে চার্জশিটও দাখিল করেছে। ঢাকার অপরাধ জগতের অন্যতম নিয়ন্ত্রক এই আব্বাসের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অসংখ্য অভিযোগও রয়েছে। তার নির্দেশে ৯০’র দশক থেকে এ পর্যন্ত ঢাকায় বেশকিছু হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়।
ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মির্জা আব্বাস এই মুহূর্তে ১৪৩ কোটি টাকার দুর্নীতিসংক্রান্ত ১৭ মামলার আসামি। এসব মামলার কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে আব্বাস রিট করলেও উচ্চ আদালত তা খারিজ করে দেন। দুদক সূত্র আরও জানায়, দুর্নীতির ১৭ মামলা ছাড়াও মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইন ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের আরও ২০টি মামলা বিচারাধীন। ফলে আব্বাসের বিরুদ্ধে চলমান মোট ৩৭টি মামলার বিচারকাজ চলছে। জানতে চাইলে দুদক কমিশনার মোঃ সাহাবুদ্দিন চুপ্পু বলেন, মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে দুর্নীতির ১৭ মামলাই তিন আদালতে বিচারাধীন। প্লট সংক্রান্ত ১২৭ কোটি টাকার দুর্নীতি মামলাও সচল রাখার ব্যাপারে উচ্চ আদালত রায় দিয়েছেন। বর্তমানে মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে ঢাকার বিশেষ জজ-৩ আদালতে দুর্নীতির ১৫টি, ঢাকার বিশেষ জজ-৪ আদালতে একটি ও মহানগর দায়রা আদালতে একটি দুর্নীতির মামলা বিচারাধীন। চারদলীয় জোট সরকারের আমলে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী থাকাবস্থায় মির্জা আব্বাস এসব দুর্নীতি করেন বলে মামলাগুলোয় উল্লেখ রয়েছে।
ঢাকার বিশেষ জজ-৪ আদালতে বিচারাধীন মামলার (নম্বর-বিশেষ মামলা ৩/২০০৮) ব্যাপারে আদালতের তৎকালীন বিচারক শামসুননাহার বেগম বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাসসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। অভিযোগ গঠনের আদেশে উল্লেখ করা হয়, মির্জা আব্বাস গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী থাকাকালে ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজে লাভবান হন এবং দলীয় একজন সংসদ সদস্য আলী আজগার লবীর মালিকানাধীন প্যাসিফিক কেমিক্যালস লিমিটেডের মাধ্যমে তাকে আর্থিকভাবে লাভবান করার উদ্দেশ্যে তেজগাঁও শিল্প এলাকায় নবসৃষ্ট শিল্প প্লট বরাদ্দে বিনিয়োগ বোর্ডে সুপারিশ করেন। এমনকি পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্রসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্যাদির অভাবে আবেদনটি অসম্পন্ন থাকা সত্ত্বেও শিল্প প্লট বরাদ্দ সংক্রান্ত নিয়মনীতি লঙ্ঘন করে ২০০৬ সালের ১৯ অক্টোবর ১৯.৪৪ কাঠার পরিবর্তে ২০.৯৬ কাঠা জমির দখল হস্তান্তর ও পরবর্তী সময়ে লিজ দলিলের রেজিস্ট্রির ব্যবস্থা করেন। এ অনিয়ম করে মির্জা আব্বাস ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ও দণ্ডবিধির ৪০৯ ধারা লঙ্ঘন করেছেন; যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
আব্বাসের বিরুদ্ধে আরও যত মামলা : মামলার নথিপত্র পর্যালোচনায় জানা গেছে, মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে ২০০১ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি রমনা থানায় জননিরাপত্তা আইনে মামলা হয়। মামলাটি বর্তমানে ঢাকার জননিরাপত্তা ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন। মামলা নম্বর-৩৫। অন্যদিকে ২০০৪ সালের ২৮ মার্চ শাহজাহানপুর ঝিল মসজিদ পুকুর পাড়ে আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের (এআইইউবি) ছাত্র আরিফ মোরশেদ খানকে হত্যার অভিযোগে মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে মতিঝিল থানায় হত্যা মামলা হয়। এর এক বছর পর ২০০৫ সালের ১৯ ডিসেম্বর শাহজাহানপুরে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে রকিবুল ইসলামকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যার অভিযোগে রকিবুলের চাচা আবদুল গফুর মতিঝিল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ২০০৮ সালে রকিবুল হত্যা মামলা ও ২০১২ সালে মোরশেদ হত্যা মামলায় আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। ২০০৭ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি আব্বাসের বাড়িতে বৈদেশিক মুদ্রা রাখার অভিযোগে মতিঝিল থানায় বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়। মতিঝিল থানার মামলা নম্বর-৭০। মামলাটি বিচারাধীন। আরও জানা গেছে, ২০০৭ সালের ২২ মার্চ আব্বাসের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা হয়। মতিঝিল থানার মামলা নম্বর-১৪০। এর চার মাস পর শাহবাগ থানায় তার বিরুদ্ধে আরেকটি দুর্নীতির মামলা হয়। শাহবাগ থানার মামলা নম্বর-৩০। ২০০৭ সালের ১৫ জুলাই আরেকটি মামলা হয়। এর এক মাস পর আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলা হয় আব্বাসের বিরুদ্ধে। মতিঝিল থানার মামলা নম্বর-৩৫। ২০০৭ সালের ৫ আগস্ট ঢাকার বিশেষ জজ আদালতে আব্বাসের বিরুদ্ধে কর ফাঁকির মামলা হয়।
dainikbandarban.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়