বুধবার ২২ মে ২০২৪ ||
জ্যৈষ্ঠ ৭ ১৪৩১
|| ১৩ জ্বিলকদ ১৪৪৫
দৈনিক বান্দরবান
প্রকাশিত: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১
বাংলাদেশে আইসিটি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, কৃষি-প্রক্রিয়াকরণ, ব্লু ইকোনমি, পর্যটন ও হাইটেক পার্কে মার্কিন বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার, নিউইয়র্কে ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল আয়োজিত ভার্চুয়াল গোলটেবিল আয়োজনে এ আহ্বান জানান তিনি। এর আগে সকালে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বিশ্বের নারী নেতাদের নেটওয়ার্ক গঠনের আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্মানে ‘বাংলাদেশ ফরওয়ার্ড: দ্য ফ্রন্টিয়ার ফর গ্রোথ’ শীর্ষক ভার্চুয়াল গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে। ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের সদস্য এবং যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ ব্যবসায়ী নেতারা এতে অংশ নেন। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিশ্রুতিশীল খাতে মার্কিন বিনিয়োগের আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, "আমরা আইসিটি, নবায়নযোগ্য জালানি, জাহাজ নির্মাণ, অটোমোবাইল, হালকা প্রকৌশল, কৃষি প্রক্রিয়াকরণ, ব্লু ইকোনমি, পর্যটন, জ্ঞানভিত্তিক হাই-টেক শিল্পসহ অন্যান্য লাভজনক খাতে মার্কিন বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। বর্তমান বার্ষিক দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ৯ বিলিয়ন ডলার থেকে বাড়াতে ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল অনুঘটকের ভূমিকা পালন করতে পারে"। এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাংলাদেশ ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট এর বিষয়ে আলোচনা শুরু করতে প্রস্তুত বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, "বাংলাদেশ সঠিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট এর বিষয়ে আলোচনা শুরু করতে প্রস্তুত। অন্যান্য সম্ভাবনাময় খাতে সুবিধা দিতে অবকাঠামো ও বিদ্যুৎ সরবারাহ নিশ্চিতে ব্যাপক বিনিয়োগ করেছে বাংলাদেশ। ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের একটি শুধুমাত্র আমেরিকান কোম্পানিগুলোকে দেয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছে বাংলাদেশ। এছাড়াও, ২৮টি হাই-টেক পার্কে মার্কিন বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি"। তিনি আরো বলেন, "দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশেরই সবচেয়ে মুক্ত বিনিয়োগ-নীতি রয়েছে, যার ফলে বিদেশী বিনিয়োগ সুরক্ষিত থাকবে। বাংলাদেশে বিদেশী বিনিয়োগ পার্লামেন্টের আইন ও দ্বিপক্ষীয় চুক্তি দ্বারা সুরক্ষিত। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানী খাত সহযোগিতা ও বিনিয়োগের স্বীকৃতি দিচ্ছে- এই সাহায্যের ফলেই আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদন স্বক্ষমতা এখন ২৫ হাজার মেগাওয়াটের বেশি। এখন আমরা নবায়নযোগ্য জ্বালানীতে মার্কিন বিনিয়োগ কামনা করছি"। তিনি বলেন, "বাংলাদেশের দ্রুত-বর্ধিষ্ণু আইসিটি খাত এখন ৬০টি দেশে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানি করছে। যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের আইসিটি পণ্য সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয়। ২০২৫ সাল নাগাদ বাংলাদেশের আইসিটি শিল্প ৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছুবে বলে আশা করা হচ্ছে। ৬ লক্ষাধিক ফ্রি-ল্যান্স আইটি প্রফেশনালদের কারণে বাংলাদেশ এখন আইসিটি খাতে বিনিয়োগের জন্য আদর্শ স্থান"। শেখ হাসিনা বলেন, "বিনিয়োগকারীরা যেন প্রতিযোগিতামূলক মজুরিতেই দক্ষ জন-সম্পদ পেতে পারেন, সেজন্য আমরা জনশক্তিকে দক্ষ করার প্রতি গুরুত্ব দিচ্ছি। তিনি বলেন, কোভিড-১৯ পরবর্তী অর্থনৈতিক উত্তরণের ক্ষেত্রে সমৃদ্ধির লক্ষ্যে পারস্পারিক সহযোগিতা ও সমন্বিত প্রচেষ্টা জরুরি। আমাদের দুই দেশের অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ সরকারের আন্তরিক সমর্থন রয়েছে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের জন্য সুবিধাজনক অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক নীতি গ্রহণের জন্য বিজনেস কাউন্সিল মার্কিন সরকারকে রাজি করাবে"। প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে আরো জানান, "আমরা এই কাউন্সিলকে আমাদের জনগণের জীবন-মান উন্নয়নের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে বিবেচনা করছি। এডিবি আউটলুক ২০১৯ এর বরাত দিয়ে তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের দ্রুততম অর্থনৈতিক উন্নয়নের দেশ"। মঙ্গলবার জাতিসংঘের ৭৬তম সাধারণ পরিষদের উদ্বোধনী অধিবেশনে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতির আহ্বানে নারী নেতাদের নিয়ে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বিশ্বনেতাদের সামনে তিনটি প্রস্তাব রাখেন। এছাড়াও নিউইয়র্কে কুয়েত ও সুইডেনের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। এসময় প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা সজীব আহমেদ ওয়াজেদ গোলটেবিল বৈঠকে বক্তব্য রাখেন এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের সভাপতি নিশা বিসওয়াল, গোলটেবিল পরিচালনা করেন এবং উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন। ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের সদস্য এবং যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দও এতে অংশ নেন।
dainikbandarban.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়