যে কোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে বান্দরবানের ‘বেইলি ব্রিজ’

পার্বত্য জেলা বান্দরবানে সংস্কারের অভাবে মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ সড়কের অধিকাংশ বেইলি ব্রিজ। এসব বেইলি ব্রিজ দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করছে হাজার হাজার মানুষ। ঝুঁকিপূর্ণ এসব বেইলি ব্রিজ শিগগিরই সংস্কার করা না হলে যে কোনো সময় ঘটতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনাসহ হতাহতের ঘটনা।বান্দরবানের বিভিন্ন উপজেলায় অবস্থিত ৭২টি বেইলি ব্রিজ প্রায় সব গুলোই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।বেশির ভাগ বেইলি ব্রিজ প্রায় ৪০-৫০ বছর পুরোনো। দীর্ঘদিনের ব্যবহার এবং রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে লোহার পাতগুলোতে মরিচা ধরেছে। অনেক সেতুর পাটাতন ভেঙে গেছে বা লোহার পাতগুলো খুলে গেছে। কিছু ক্ষেত্রে পাটাতনগুলো এতটাই জরাজীর্ণ যে সেগুলোর নিচে বালির বস্তা বা গাছের গুঁড়ি দিয়ে জোড়াতালি দিয়ে রাখা হয়েছে।
অতিরিক্ত পণ্যবাহী যানবাহন চলাচলের কারণে সেতু
কাঠামোতে ফাটল ধরেছে এবং অনেক ক্ষেত্রে কিছু
অংশ দেবেও গেছে। সেতুগুলোতে ভারী যানবাহন চলাচলের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা মানা হয় না, যার কারনে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে।
স্থানীয়রা জানায়, বান্দরবানে প্রায়ই পাথর, কাঠ বা অন্যান্য ভারী মালামাল বোঝাই ট্রাক এসব সেতু দিয়ে প্রতিনিয়ত পার হচ্ছে, যা সেতুর উপর অতিরিক্ত চাপ ফেলছে। এগুলো বন্ধ হওয়া দরকার।
যখন কোনো বেইলি সেতু ভেঙে পড়ে বা এর পাটাতন খুলে যায়, তখন ওই সড়কের যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে স্থানীয় বাসিন্দা, পর্যটক, এমনকি জরুরি প্রয়োজনে চলাচলকারী সবার দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বর্ষা কালে ব্রিজের নিচের মাটি সরে গিয়ে আরো বেশি দুর্ঘটনার স্বীকার হচ্ছে স্থানীয়।
এসব ঝুঁকিপূর্ণ সেতু দিয়ে চলাচল করা মানুষের চলাচলে যেমন ব্যাঘাত ঘটায় তেমনি হঠাৎ সেতু ভেঙে যানবাহন খাদে পড়ে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, বান্দরবান জেলার গুরুত্বপূর্ণ আটটি সড়কে বর্তমানে মোট ৭২টি বেইলি সেতু এখনো ব্যবহার হচ্ছে, যার মধ্যে প্রায় সব সেতুই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে তবে এগুলোর মধ্যে বান্দরবান-রুমা সড়কের ১৩টি বেইলি সেতু, রোয়াংছড়ি, থানচি, লামা-আলীকদম ও আজিজনগর-গজালিয়া সড়কসহ বেশ কিছু সড়কের বেইলি সেতু খুব বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
বান্দরবানের সড়ক ও জনপদের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: সাখাওয়াত হোসেন বলেন, সড়ক ও জনপথ বিভাগ থেকে চট্টগ্রাম জোনের বেশ কিছু বেইলী সেতু আরসিসি সেতুতে রূপান্তর করার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে তার মধ্যে বান্দরবানের ৫২ আছে। প্রকল্পের ফাইল বর্তমানে সড়ক ও পরিবহন মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। আমরা বান্দরবান থেকে প্রস্তাব পাঠিয়েছি।